ঢাকা: রাজধানীসহ সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আগুন। গেল এক মাস ধরে চলা মূল্যবৃদ্ধির ধারায় সবজির দাম কিছুটা কমলেও, শুক্রবার (১ আগস্ট) আবারও দাম ঊর্ধ্বমুখী। সবজি, মুরগি, ডিম, মাছ, এমনকি চাল-ডালেও অতিরিক্ত দাম গুনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
রাজধানীর কাপ্তানবাজার, মহাখালী, শ্যাওড়াপাড়া, কারওয়ানবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে—সবজির দাম প্রায় সব ক্ষেত্রেই ৬০ থেকে ১২০ টাকার ঘরে। সবচেয়ে বেশি দামি সবজির তালিকায় রয়েছে বেগুন ও বরবটি, যা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকায়। আর সবচেয়ে সস্তা সবজি হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া ও পেঁপে—যেগুলোর দাম ৩০ টাকা কেজি।
আজকে বাজারদর, বেগুন (গোল/লম্বা): ৮০-১২০ টাকা/কেজি, বরবটি: ১২০ টাকা, করলা: ৬০-১০০ টাকা, কচুর লতি: ৬০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স, পটোল, চিচিঙ্গা: ৫০-৬০ টাকা, শসা (দেশি): ১০০ টাকা | শসা (হাইব্রিড): ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ: ১৬০-২৪০ টাকা, টমেটো: ১৪০-১৮০ টাকা, গাজর: ১৬০ টাকা, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া: ৩০ টাকা, কাঁচা কলা (হালি): ৪০ টাকা, লাউ, চালকুমড়া (পিস): ৫০-৭০ টাকা, ধনেপাতা: ১২০ টাকা/কেজি।
মুরগি ও ডিমের বাজারদর: ফার্মের প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকা (এক সপ্তাহে বেড়েছে ১০ টাকা), মুরগি ব্রয়লার: ১৬০ টাকা/কেজি, সোনালি: ৩০০-৩৩০ টাকা/কেজি, দেশি মুরগি: ৬০০-৭০০ টাকা/কেজি, লেয়ার (সাদা): ৩১০ টাকা | লেয়ার (লাল): ৩২০ টাকা, হাঁস (পিস): ৬০০-৭০০ টাকা।
মাছের বাজারদর: ইলিশ ৫০০-৬০০ গ্রাম: ১৬০০-১৭০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম: ২১০০-২২০০ টাকা, ১ কেজি: ২৫০০-২৬০০ টাকা, দেড় কেজি: ৩০০০-৩২০০ টাকা, বোয়াল: ৭৫০-৯০০ টাকা/কেজি, কোরাল: ৮৫০ টাকা, আইড়: ৭০০-৮০০ টাকা, রুই: ৩৮০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া: ১৮০-২২০ টাকা, পাঙাশ: ১৮০-২৩০ টাকা, পাবদা/শিং: ৪০০-৫০০ টাকা, ট্যাংরা: ৭৫০-৮৫০ টাকা, কাঁচকি: ৬৫০-৭০০ টাকা, মলা: ৫০০-৫৫০ টাকা।
চাল-আলু-পেঁয়াজের দাম: মিনিকেট চাল (ডায়মন্ড/সাগর): ৮০ টাকা/কেজি, মিনিকেট (মোজাম্মেল): ৮৫-৯০ টাকা, মোটা চাল: ৫৬-৬২ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, রসুন ১০০-১৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা, আদা ১৪০ টাকা
মহাখালী বাজারে এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রমজানে বেগুনের দাম ১০০ টাকা হলেও মেনে নিয়েছিলাম, কিন্তু এখন বেগুন ১২০ টাকা কেজি! বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সাধারণ মানুষের জন্য এটা চরম দুর্ভোগ।”
মগবাজারের আরেক ক্রেতা বলেন, “সবজির দাম এমন হলে মাছ-মাংস কেনা অসম্ভব। সবচেয়ে সস্তা শুধু পেঁপে আর কুমড়া। বাকি সবই এক কেজি না, আধা কেজিতে নামিয়ে আনতে হচ্ছে।”
অন্যদিকে মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা আলমাস আলী বলেন, “পাইকারি বাজারে দাম বেশি, তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মৌসুম শেষ এবং টানা বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে গেছে।”
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশে খাদ্যপণ্যের দামে অস্থিরতা বেড়েছে সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা, পরিবহন খরচ এবং মৌসুমি প্রভাবের কারণে। টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা কৃষিপণ্যের পরিবহন ব্যাহত করেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাজারে।
নিত্যপণ্যের এমন লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাজারে নজরদারি জোরদার না হলে আগামী দিনে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়বে—এমনটাই আশঙ্কা ভোক্তাদের।
ওএফ







































