• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যবসায় কলেজছাত্র হাফিজের সাফল্য 


সাজেদুর আবেদীন শান্ত ডিসেম্বর ২৯, ২০২১, ০১:২৪ পিএম
ব্যবসায় কলেজছাত্র হাফিজের সাফল্য 

ছবি :  আব্দুল্লাহ আল হাফিজ

ঢাকা : আব্দুল্লাহ আল হাফিজ। ঢাকার খিলগাঁওয়ে একটি সরকারি কলেজের ছাত্র। বাবা এস এম সোলায়মান ও মা রেহেনা পারভীনের একমাত্র ছেলে তিনি। ঢাকায় থাকছেন পরিবারের সঙ্গে। ছোটবেলার স্বপ্ন বড় হয়ে একজন ব্যবসায়ী হবেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই হাফিজ পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসায় মনোনিবেশ করছেন।

হাফিজ বলেন, ‘মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষেই আমি নিজ উদ্যোগে টুকটাক ফ্রিল্যান্সিং শুরু করি এবং কয়েক মাসের মধ্যেই মোটামুটি ভালোই দক্ষতা অর্জন করি। আউটসোর্সিং অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত হতে আমার বেশি সময় লাগেনি। এর পাশাপাশি ঢাকায় আমি নিজ অর্থায়নে দুটি লাইফ স্টাইল ব্র্যান্ড চালু করেছি। একটি জেন্টস ‘মিয়া লাইফ স্টাইল’ (MIYAA Lifestyle) এবং অন্যটি লেডিস ‘তাহিরা ইম্পোরিয়াম’ (Tahiraa Emporium)। আলহামদুলিল্লাহ আমি এই দুটো থেকে অল্প সময়ের মধ্যে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। এখন আমি এই দিকেই বেশি সময় দিচ্ছি।’

বর্তমানে হাফিজ ৩টা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। মিয়া লাইফ স্টাইল (MIYAA Lifestyle), তাহিরা ইম্পোরিয়াম (Tahiraa Emporium) এবং আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ‘THE BEST ONE’। লাইফ স্টাইল ব্র্যান্ডের মধ্যে মিয়া লাইফ স্টাইলটা হাফিজ সর্বপ্রথম শুরু করেন। প্রথম দিকে পাঞ্জাবি দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী টি-শার্ট, শার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেট থেকে শুরু করে একজন পুরুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যসামগ্রী মিয়া লাইফ স্টাইলের অন্তর্ভুক্ত করেছেন তিনি। এসব পোশাক আইটেমগুলো মিয়া লাইফ স্টাইলের নিজস্ব কারখানায় তৈরি করা হয়। সবসময় সুলভ মূল্যে সেরা পণ্যটি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় মিয়া লাইফ স্টাইল প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এছাড়াও মিয়া লাইফ স্টাইলের অনেক গ্রাহকই মহিলাদের প্রোডাক্ট নিয়ে অনুরোধ করায় হাফিজ পৃথকভাবে  তাহিরা ইম্পোরিয়াম নামে একটা লেডিস অনলাইন শপ সদ্য চালু করেছেন। সেখানে বর্তমানে শুধু মহিলাদের পোশাক আইটেমগুলো পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেখানে এখন হ্যান্ড পেইন্টেড আইটেমের বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। খুব শিগগিরই মহিলাদের অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও পাওয়া যাবে বলে জানান হাফিজ। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যেহেতু মহামারি করোনা পরিস্থিতি চলছে, তাই ক্রেতারা অনলাইন কেনাকাটায় বেশি নির্ভরশীল। সেজন্য আমি মিয়া লাইফ স্টাইল এবং তাহিরা ইম্পোরিয়াম দুটোই অনলাইনে সচল রেখেছি। যদিও মিয়া লাইফ স্টাইল অফলাইনেও সচল রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতেই আমরা কুরিয়ারের মাধ্যমে সব প্রোডাক্ট পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমাদের সার্ভিস শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবো না, দেশের বাইরে পৌঁছে দিতে চাই।’

হাফিজের কারখানায় কাজ করেন রাসেল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘হাফিজ ভাই খুবই আন্তরিক একজন মানুষ। তিনি খুব পরিশ্রমী। সততা ও পরিশ্রমের জন্য তিনি সফল হবেন। ইনশাআল্লাহ। আমার মতো তার কারখানায় চুক্তিভিত্তিক আরও অনেকেই কাজ করেন। হাফিজ ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের মতো অনেক বেকারের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।’
এছাড়াও হাফিজের আরেক প্রতিষ্ঠান আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট THE BEST ONE এর মাধ্যমে তিনি অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে আইটি প্রশিক্ষণ দেন। এখান থেকে অনেক শিক্ষার্থী ফ্রিল্যান্সিংসহ নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।

হাফিজের বাবা এস. এম. সোলায়মান একুশে টিভি অনলাইনকে জানান, ‘আমার ছেলে খুবই পরিশ্রমী। প্রথম প্রথম আমি ভাবতাম হাফিজ হয়তো এগুলো করতে গিয়ে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বে কিন্তু না সে পড়াশোনা ঠিক রেখে এগিয়ে চলেছে। আলহামদুলিল্লাহ ছাত্র হিসেবেও হাফিজ খুব মেধাবী। হাফিজের মতো সৎ ও পরিশ্রমী ছেলে পেয়ে আমি গর্বিত।'

হাফিজ মনে করেন কঠোর পরিশ্রম ও প্রচণ্ড জেদ থাকলে সবকিছুই করা সম্ভব। চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হলে দেশে বেকারত্ব যেমন হ্রাস পাবে, তেমনি অনেকের কর্মসংস্থানো সৃষ্টি হবে। তার মতো শিক্ষার্থীরাই সোনার দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।

সোনালীনিউজ/এসএন

Wordbridge School
Link copied!