• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা সব ভয়ঙ্কর জঙ্গি, হিংস্রতায় বিপন্ন


ফিচার ডেস্ক মার্চ ৩১, ২০১৭, ০৪:৩৭ পিএম
ওরা সব ভয়ঙ্কর জঙ্গি, হিংস্রতায় বিপন্ন

ঢাকা: বর্তমান বিশ্বে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রধান সমস্যা। এ সমস্যা দূর করতে বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বিশ্বের হর্তাকর্তারা। গাছের শিঁকড় কেটে মাথায় পানি ঢেলে যাচ্ছেন তারা। জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ সমাজে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ায়। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সৃষ্টি করে। জঙ্গিবাদের প্রধান শিকার হয় সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুরা।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কাজ করে এমন সব সংগঠনের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বিশ্বে নিজেদের অধিপত্য টিকিয়ে রাখতে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো। ফলে এই জঙ্গি সংগঠনগুলো বিভিন্ন দেশে তাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সরকার ও সমাজের মানুষের সঙ্গে অসম যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে ঝরে পড়ছে লাখ লাখ প্রাণ। জন্ম থেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছে লাখ লাখ শিশু।

মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক, আবগানিস্তান, অফ্রিকার সুদান, লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, আফ্রিকান রিপাবলিকসহ অনেক দেশ এই জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে গেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, প্রথমে অর্থ ও অস্ত্রের যোগান বন্ধ করে দিতে হবে। তারপর ধর্মীয় উগ্রতা বন্ধ করতে কৌশলী পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর চিন্তার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।

চলুন ফিচার ভিত্তিক অনলাইন ম্যাগাজিন দি রিচেস্ট-এর প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্বের ভয়ঙ্কর ১০ জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে জানি। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের বরাত দিয়ে।

এলআরএ

১০. দি লর্ড’স রিসিস্টান্স আর্মি (এলআরএ)
এটি আফ্রিকা ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন। তারা উগান্ডা, সেন্ট্রাল অফ্রিকান রিপাবলিক, কঙ্গো এবং দক্ষিণ সুদানে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এ সংগঠনের প্রধান হলো জোসেফ কোনি। তারা ওই এলাকায় শান্তি ও উন্নয়ন ফিরে আনার কথা বলে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অপহরণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালায়। মানবাধিকার সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী শুধু ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যেই প্রায় ৪ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে এলআরএ। গৃহহীন করেছে হাজার হাজার মানুষকে।

ফার্ক

৯. ফারকাস আরমাডাস রেভুলেশনারিস দ্য কলম্বিয়া (ফার্ক)
ফার্র দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়া প্রজাতন্ত্রের একটি গেরিলা সংগঠন। এরা মূলত কমিউনিস্টবাদে বিশ্বাসী। সম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এরা লড়াইয়ের কথা বললেও দেশটিতে তারা সবধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তারা তাদের বিরোধীদের স্ত্রী ও মেয়েদের ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে চেহারা বিকৃত করার মত নিকৃষ্ট কাজ করে। হিউম্যান রাইটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয় ফার্সের সদস্যরা দেশটিতে গেরিলা হামলা চালিয়ে হাজার হাজার 
মানুষ হত্যা করেছে। 

তেহরিক-ই তালেবান

৮. তেহরিক-ই তালেবান
এটি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন। এরা মূলত দেশ দুটিতে ইসলামী শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার কথা বলে। তারা দেশ দুটির বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালিয়ে মাঝে মাঝে জানান দেয়। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বোমা হামলার অভিযোগ রয়েছে। অফগানিস্তানে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধ করছে।

এলটি

৭. লস্কর-ই-তাইয়েবা (এলটি)
এই জঙ্গি সংগঠনটি পাকিস্তান ও ভারতে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এলটি বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই গঠিত হয়। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নকে হঠাতে। তাদের অনেক বড় একটি সশস্ত্র গেরিলা ইউনিট রয়েছে। যারা ২০০১ সালে ভারতের সংসদে হামলা, ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে হামলা করে যেখানে ১৬০ জন মানুষ মারা যায়। এছাড়াও ২০০৬ সালে মুম্বাইয়ে একটি কমিউটার ট্রেনে হামলা করে। 

আল শাবাব

৬. আল শাবাব
২০০৬ সালে পূর্ব আফ্রিকায় আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর উদ্ভব। সংগঠনটি মূলত বিদেশি অর্থে পরিচালিত হয়। এটি পূর্ব অফ্রিকার দেশ সোমালিয়া, উগান্ডা জুড়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তারাও সশস্ত্র সংগঠন। তাদের অন্যান্য অয়ের উৎসের মধ্যে রয়েছে, চাঁদাবাজী, অবৈধ ব্যবসা, কিডনাপিংসহ আরো অনেক কিছু। তাদের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড হলো- কেনিয়ার ওয়েস্টগেট মলে হামলা, এছাড়া ২০১৩ সালে নাইরোবির একটি শপিং মলে হামলা। যেখানে বিদেশিসহ ৬০ জন নিহত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে কেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভয়াবহ হামলা চালায় যেখানে ১৪৮ জন শিক্ষার্থী মারা যায়।

৫. হিজবুল্লাহ
সংগঠনটি মধ্যপ্রাচ্যের লেবানন কেন্দ্রিক। তাদের রয়েছে একটি সমৃদ্ধ গেরিলা বাহিনী। তারা আকাশপথ ও স্থলপথে যুদ্ধ করতে সক্ষম। তারা মূলত ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরাইলকে প্রতিহত করতে গঠিত হয়। লেবানন সরকারে তাদের প্রতিনিধিও রয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বোকো হারাম

৪. বোকো হারাম
এই সংগঠনটিও পূর্ব আফ্রিকা কেন্দ্রিক। বোকো হারাম অর্থ হলো- পশ্চিমা শিক্ষা হারাম। সংগঠনটির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধের অভিযোগ। তারা কিডনাপ, হত্যা, বোমা হামলায় জড়িত। এর মধ্যে নাইজেরিয়ার ২০০ স্কুলছাত্রীকে কিডনাপ, প্রায় ৬ হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। 

তালেবান

৩. তালেবান
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর। এটি ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান জুড়ের তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে। মূলত অফগানিস্তানে সোভিয়েত হটাও আন্দোলনে তারা বড় ভূমিকা পালন করে। তখন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিলো। বর্তমানে তারা ইরাক ও অফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধেলিপ্ত।

আলকায়দার আঘাত

২. আলকায়দা
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন-টাওয়ারে হামলাকারী সংগঠন হলো আলকায়দা। যেখানে প্রায় ৩ হাজার অমেরিকান নিহত হয়। এই মোস্ট ওয়ান্টেড সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন ওসামা বিন লাদেন। যাকে ২০১১ সালে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আইএস

১. আইএস
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন হলো ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যারা মুসলিম ছদ্মবেশে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। যে কারণে আজ মধ্যপ্রাচ্য অশান্ত। যাদের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি সাবেক ইহুদী বলে ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন জুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!