• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বালু সংকটে থমকে গেছে সরকারি উন্নয়ন কাজ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৩, ২০২২, ১১:৫৭ এএম
বালু সংকটে থমকে গেছে সরকারি উন্নয়ন কাজ

ঢাকা : গত মার্চ মাস থেকে চাঁদপুরের চারটি নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। আর এতে সংকটে পড়েছে বেশকিছু সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। বালু উত্তোলন না করায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্য কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন এ খাতে কর্মরত শ্রমিকরাও।

পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন মেনে পরিবেশসম্মতভাবে বালু উত্তোলন করতে দিলে বরং সরকারেরই লাভ। একদিকে সরকার রাজস্ব পাবে, অন্যদিকে নদী ভরাট হবে না। নাব্য থাকলে নৌযান চলাচলেও বিঘ্ন হবে না।

এ বিষয়ে জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক বলেন, ‘আইন মেনে পরিবেশসম্মত উপায়ে যদি বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে নদীর নাব্য বাড়ানো সম্ভব। এতে নদীর গতিপথ যেমন ঠিক থাকবে তেমনি নদীর স্রোতধারাও ঠিক থাকবে। এখান থেকে সরকার বাড়তি আয়ও করতে পারবে। তবে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা যাবে না। এক্ষেত্রে সরকারি কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, যেসব জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করলে নদীর ক্ষতি হবে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না। নদীতে জেগে ওঠা চরগুলো থেকে বালু উত্তোলন করা যেতে পারে।’

এদিকে চাঁদপুরে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় সরকারের উন্নয়নকাজে ধীরগতি এসেছে। বালু সংকটের কারণে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট থেকে রামগতি পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ গত জানুয়ারি থেকে বন্ধ আছে। প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে নিয়েছিল সরকার। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। ২৭টি প্যাকেজে ১৬ জন ঠিকাদার বেড়িবাঁধের কাজটি করছিলেন। বালুর অভাবে গত ৯ জানুয়ারি থেকে কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদাররা।

কাজ বন্ধ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বালুর সংকট রয়েছে এখানে, সে কারণে দামও বেড়ে গেছে। এর ফলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখন আংশিক চালু হয়েছে।’ এখানে সরকারের বেশ কয়েটি বড় প্রকল্প রয়েছে বালুর অভাবে কাজের গতি কমে গেছে বলেও তিনি জানান।

নতুন বালুমহাল ঘোষণার দাবিতে ভূমি মন্ত্রণালয় আবেদন করেছেন অনেকে। তাদের দাবি পদ্মা ও মেঘনার ডুবোচরগুলোকে বালুমহাল হিসেবে ঘোষণা করুক সরকার।

এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী চাঁদপুর পুরান বাজার এলাকার মো. নাজিমুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা ও পদ্মা নদীতে অসংখ্য ডুবোচরের কারণে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সদর উপজেলার চিরাচর, শিলারচর, ঘোড়ামারা, জাহাজমারা, চর প্রকাশ, চর নন্দলালসহ বেশ কয়েকটি জায়গাকে বালুমহাল ঘোষণার দাবিতে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী এসব মহাল ইজারা দেওয়া উচিত। এসব চর খনন করলে নদীর নাব্য বাড়বে সরকারের রাজস্বও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে সম্প্রতি কথা বলেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। গত ১৩ জুন এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বালু উত্তোলনে একটি নীতিমালা হচ্ছে। এই নীতিমালাটি ইতোমধ্যে

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বালু উত্তোলন করা যাবে। কোনোভাবেই রাতে বালু উত্তোলন করা যাবে না।

তিনি বলেন, ‘নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে যে স্থানটিকে বালুমহাল ঘোষণা করা হবে সেখান থেকেই শুধু বালু উত্তোলন করা যাবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বালুমহাল আছে।

এগুলো জেলা প্রশাসন ইজারা দেয়, তবে এর সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে যুক্ত করা হবে।’ বালু উত্তোলন বন্ধ হলে বালুর দাম বাড়বে, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত বলেও মন্ত্রী এ সময় মন্তব্য করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!