ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত-যা অতীতের যেকোনো বন্দোবস্তের চেয়ে স্বচ্ছ, সুগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। তাঁর মতে, এই সনদ আইনের পাতায় স্মরণীয় ইতিহাস হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে ভীরু কাপুরুষ হিসেবে বিবেচিত হব। চ্যালেঞ্জ আছে, তবে তা উত্তরণযোগ্য। জুলাই সনদ নিয়ে অযথা তর্ক-বিতর্ক অনর্থক-এটি কোরআন বা বাইবেল নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না।’
শনিবার (১৮ অক্টোবর) এফডিসিতে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানকে নানা কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারগুলো আইনের শাসন ব্যাহত করেছিল, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে।
তিনি যোগ করেন, “জুলাই হত্যার বিচার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে, এই বিচার কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। বিগত ফ্যাসিস্টদের গুম-খুনের বিচারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। যুক্তি-তর্ক শেষ, এখন শুধু রায়ের অপেক্ষা। জুলাই চেতনার অঙ্গীকারই এই বিচারের ভিত্তি।”
ছায়া সংসদের সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “জুলাই সনদ জাতির ঐতিহাসিক দলিল। এর বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভর করছে আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। জুলাই সনদ ব্যর্থ হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি আবার মাথাচাড়া দেবে, দেশ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে পড়বে।”
তিনি বলেন, “হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে। এই দলিলে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন ঘটেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর অবসান ঘটবে।”
কিরণ আরও যোগ করেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পথ আরও সুস্পষ্ট হয়েছে। তবে সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবল নির্বাচনই গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। জুলাই সনদ দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনকল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার।’
তিনি সতর্ক করেন, ‘যদি আগামীর বাংলাদেশ জুলাই সনদের আলোকে পরিচালিত না হয়, তবে জাতির প্রতি অবিচার হবে। যে দল এই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে, জনগণ ভবিষ্যতে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতায় প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। তারা ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে।
প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, মনিরুজ্জামান মিশন ও মাইদুর রহমান রুবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের হাতে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন অতিথিরা।
এসএইচ







































