ঢাকা: বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষোভের মুখে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে থাকা একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে এ ছবি সরানো হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি আয়োজন করে।
সেই আয়োজনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ তৈরি হয়।
এদিকে টিএসসিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে বামপন্থী সংগঠন ও শিবিরের সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রশিবিরকে বলি যে ছবিগুলো সরাতে হবে। তারা ছবি সরিয়ে নিতে সম্মতি দেয়। পরে আমাদের সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় ছবিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।’
ছবি সরিয়ে নেওয়ার পর ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম ফরহাদ ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের তিন দিনব্যাপী আয়োজনের ফটোফ্রেমগুলোর একটা অংশ নিয়ে কুতর্ক এবং মব সৃষ্টি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট। আমাদের জাতীয় ইতিহাসে একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ গৌরবজনক অধ্যায়। বাকশাল কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধকে প্রথমবারের মতো প্রশ্নবিদ্ধ করেছে শাহবাগের পূর্বসূরিরা। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালে শাহবাগ কায়েম করে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বানায় এই শাহবাগ। শাহবাগ ও বাকশালের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান জারি থাকবে।
‘হাসিনা গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমসহ যত অপরাধ করেছে, তার প্রতিটিকেই আমরা উপস্থাপন করেছি। যেমন শাপলা হত্যাকাণ্ড, সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি। একই সঙ্গে শাহবাগের মবতান্ত্রিক ট্রাইব্যুনাল নাটকের মাধ্যমে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। ফ্রেমের ছবিগুলোতে যেসব ব্যক্তিবর্গের ছবি ছিল, তারা বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার।’
বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপেই গুম, কেলেঙ্কারি, মিথ্যা সাক্ষ্য, আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও সুষ্ঠু বিচারের তোয়াক্কা না করেই ফ্যাসিবাদী কায়দায় রায় প্রদান ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এই শিবির নেতা।
এদিকে প্রদর্শনীতে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি রাখার বিষয়টিকে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে বিতর্কিত করে একাত্তরের মুখোমুখি দাঁড় করানোর এক ঘৃণ্য চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদের মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে শিবির একাত্তরকে মুছে দেওয়ার হীন চেষ্টা চালাচ্ছে। আর বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন শিবিরের কর্মসূচিতে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এদিকে টিএসসি প্রাঙ্গণে স্বীকৃত রাজাকারদের ছবি প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছবি প্রদর্শন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল।
এআর







































