• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও সুন্নত


ধর্মচিন্তা ডেস্ক জুন ১৭, ২০২৪, ০৬:৩৯ এএম
ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও সুন্নত

ঢাকা : আল্লাহর ইবাদতসমূহের মধ্যে কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মুসলিম উম্মাহর জন্য এই কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানি সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক মহান নির্দেশ। আল্লাহ চান বান্দা নিজের প্রিয় বস্তু আল্লাহর জন্য কোরবানি করে সন্তুষ্টি অর্জন করুক। আর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সেই সুযোগ চলে এসেছে আমাদের সন্নিকটে। 

পৃথিবীর আদি যুগ থেকে এই কোরবানির প্রথা চালু রযেছে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ। সুতরাং তারই নিকট আত্মসমর্পণ করো। (হে নবী! আপনি) বিনয়ীদেরকে সুসংবাদ দিন।’ (সুরা হজ ৩৪)
 
হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা কোরবানি চালু করেন। তা কোরআনের সুরা মায়েদায় উল্লেখ করেছেন। তার পরবর্তীতে আমাদের বর্তমান কোরবানি মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম ও ইসমাইল (আ.) থেকে শুরু হয়। তা আল্লাহতায়ালা সুরা সফফাতে উল্লেখ করেছেন।

গোশত খাওয়ার মধ্যেই কোরবানির উপকারিতিা সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ভেতর রয়েছে অনেক কল্যাণ। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ কোরবানিটা কী? তিনি বললেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত। তারা আবার জিজ্ঞেস করলেন এতে কী আমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে? রাসুল (সা.) বললেন, কোরবানির পশুর প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে কল্যাণ রয়েছে। (মুসনাদে আহমদ)

আল্লাহতায়ালা রাসুল (সা.)-কে কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি আপনাকে হাউজে কাউসার দান করেছি। অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ আদায় ও কোরবানি করুন।’ (সুরা কাউকার)

সামর্থ্য থাকা সত্বেও কোরবানি বর্জন করার ব্যাপারে হাদিসে ধমকি এসেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যার সামর্থ্য আছে অথচ কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (মুসনাদে আহমদ)

যারা কোরবানি করবে তাদের জন্য আল্লাহতায়ালার নিকট রয়েছে অনেক মর্যাদা। কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সেরা কাজ হলো পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করা (জবাই করা) অপেক্ষা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় মানুষের কোনো আমল হতে পারে না। কিয়ামতের দিন পশুর শিং, লোম ও পায়ের খুরসহ সব উপস্থিত হবে। এর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়। সুতরাং আমাদেরকে স্বাচ্ছন্দ্য হৃদয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। (ইবনে মাজাহ)

প্রাপ্তবয়স্ক জ্ঞানবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তাদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

নিসাবের পরিমাণ হলো সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত ভরি, রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে এসবের মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি ৮/৪৫৫)

ঈদুল আজহার সুন্নতসমূহ : অন্যদিনের তুলনায় সকালে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া, মিসওয়াক করা, গোসল করা, শরিয়তের গণ্ডির ভেতরে থেকে সাজসজ্জা করা, সামর্থ্য অনুযায়ী উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, ঈদুল আজহার দিন সকালে কিছু না খেয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া। নামাজের পর নিজের কোরবানির গোশত দিয়ে আহার করা, সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া, ঈদের নামাজ ঈদগাহে আদায় করা, এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়িতে আসা, পায়ে হেঁটে যাওয়া, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় পথে এই তাকবির আওয়াজ করে পড়তে থাকা।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!