• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কা টেস্ট হারায় যাদের দুষলেন আশরাফুল


ক্রীড়া ডেস্ক মে ৩, ২০২১, ০৩:১০ পিএম
শ্রীলঙ্কা টেস্ট হারায় যাদের দুষলেন আশরাফুল

সংগৃহীত

ঢাকা : ক্যান্ডিনে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ দল। সোমবার (৩ মে) শেষদিন মাঠে নেমে মাত্র ৫০ রান যোগ করেই অলআউট মুমিনুলের দল। আর তাতে ২০৯ রানের বিরাট পরাজয় গ্রাস করেছে। এমন ফল যে হতে পারে, তার আভাস মিলেছিল চতুর্থ দিন শেষেই।

তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম আর দুই নবীন সাইফ হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্ত আগেই সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। শেষ স্বীকৃত ব্যাটিং লিটন দাস আর মিরাজ ছিলেন অপরাজিত। কিন্তু তারাও কিছু করতে পারেননি। সকালে তৃতীয় বলেই আউট লিটন। তারপর যাওয়া আসার পালায় ২২৭ রানে শেষ দ্বিতীয় ইনিংস।

এদিকে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের কোচ সারোয়ার ইমরান আগেরদিনই বলে দিয়েছিলেন, আমরা ম্যাচের কোথাও নেই। খেলার ৯০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ লঙ্কানদের হাতে। খুব অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে আমাদের ১০ শতাংশও সুযোগ নেই।

ঠিক তাই হয়েছে। কেন এমন করুণ পরিণতি? তা নিয়ে নানা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। বাংলাদেশের এমন করুণ পরিণতির কারণ চিহ্নিত করে বলেছেন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। 

সর্বকণিষ্ঠ টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে এই শ্রীলঙ্কায় টেস্ট অভিষেকে শতরান করা আশরাফুলের মতে, মুমিনুল বাহিনীর এত বড় পরাজয়ের প্রধান কারণ হলো টস হারা এবং ভুল একাদশ সাজানো।

আশরাফুল ধরা গলায় বলেন, ‘আসলে দুঃখ লাগছে অনেক। পাশাপাশি একটি আফসোসও কুড়ে খাচ্ছে। তা হলো একাদশ নির্বাচন। আমরা দেশে থেকে যেটা ফিল করছিলাম, যারা খুব কাছ থেকে মাঠ, উইকেট আর লঙ্কান স্কোয়াড দেখেও কেন তা ঠাউরে উঠলেন না, তা আমার কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের টিম ম্যানেজম্যান্টের অবশ্যই বোঝা উচিৎ ছিল, লঙ্কান স্কোয়াডে বাড়তি স্পিনার, উইকেট প্রথম টেস্টের তুলনায় অনেক বেশি শুকনো- তার মানে টার্নিং পিচ হবে। প্রথম দুই-তিন দিন ঠিক থাকলেও, চতুর্থ দিন থেকে পিচে টার্ন থাকবে। সেখানে বাড়তি স্পিনার না হয়, স্পিনিং অলরাউন্ডারের অন্তর্ভুক্তি খুব জরুরি ছিল।’

আশরাফুল আরো বলেন,‘টিম ম্যানেজমেন্টের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, একাদশ নির্বাচন দেখে মনে হয়নি তারা সেটা বিবেচনায় এনেছেন। তা বিবেচনায় আনলে অতি অবশ্যই একজন পেসার কমিয়ে বাড়তি স্পিনার না হয় ব্যাটসম্যান দলে রাখতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। কাজেই আমি বলব, এই টেস্টে একাদশ সাজানোই ঠিক ছিল না।’

সেটা কেমন? আশরাফুলের জবাব, ‘এই পাল্লেকেল্লে স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে স্বাগতিকরা তিন পেসার দিয়ে টাইগারদের ঘায়েল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। আমাদের তামিম শুরুতেই লঙ্কান পেস বোলিংকে তছনছ করে দিয়েছে। পরে শান্ত-মুমিনুল আর মুশফিক-লিটনও ভাল খেলে স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়েছে। তাই দ্বিতীয় টেস্টে লঙ্কানরা কৌশল পাল্টাতে পারে আমার মনে হচ্ছিল। ঠিক তাই হয়েছে।’

সর্বকণিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান বলেন, ‘এই টেস্টে লঙ্কানরা আসলে জয়ের লক্ষ্যেই স্পিন সহায়ক পিচ তৈরি করেছে। সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। আর তাই ওদের একাদশে দুজন স্পিনার। অফস্পিনার রমেশ মেন্ডিস আর বাঁহাতি অর্থোডক্স প্রবীন জয়াবিক্রম। তারাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। দুজনে মিলে আমাদের ২০ উইকেটের ১৭টি নিয়েছে।’

সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘অথচ আমরা হাঁটলাম ভুল পথে। উইকেট আর প্রতিপক্ষ স্কোয়াড দেখেও আমরা টিম কম্বিনেশনে কোনো রদবদল করলাম না, সেটা একই থাকলো। সেই ৬ ব্যাটসম্যান আর ৫ বোলার ফর্মুলাই অনুসরণ করলাম। যা এই পিচের সঙ্গে মোটেও মানানসই ছিল না।’

আশরাফুল আরও বলেন, ‘আমাদের যেহেতু স্কোয়াডে শুভাগত হোম আছে। কাজেই আমি মনে করি একজন পেসার কমিয়ে শুভাগতকে খেলানো উচিৎ ছিল। তাতে একজন স্পিনারই শুধু বাড়ত না, ব্যাটিংটাও লম্বা হতো। শুভাগতর ব্যাটিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হয়তো পরীক্ষিত না, তবে আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে যতটা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে তার ব্যাটিং সামর্থ্য ভালো। আর বাড়তি স্পিনার হিসেবেও কাজ চালিয়ে যেতে পারত।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মিরাজের পরে নিচের দিকে আর কেউ নেই যে এক-আধটু ব্যাটিং পারে। লেজের অবস্থা খুব খারাপ। তাসকিন, তাইজুল, রাহি আর শরিফুল কিছুই ব্যাটিং পারে না। তার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো প্রথম ইনিংসে শেষ ৫ উইকেটের পতন ঘটেছিল ২৭ রানে। আর আজ আমরা শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছি ৪৪ রানে। শুভাগত থাকলে ব্যাটিংটাও বাড়ত।’

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!