ঢাকা : ফুটবল বিশ্বকাপ জেতা দলগুলো দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে। এটাই রেওয়াজ। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ জিতে দেশের ফেরার পর আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা সেই রেওয়াজ রীতির যেন সাময়িক ইতি টানলেন। রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজের সঙ্গে দেখা করেননি লিওনেল মেসিরা। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে নিমন্ত্রণ করা হলেও মেসিরা সেই নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানই করেছেন।
১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনা দল রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিল। সেখানে তাদের দেওয়া হয় সংবর্ধনা। দেশটির শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক ‘বুয়েনস এইরেস টাইমস’ জানিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হওয়ার শঙ্কা থেকেই নাকি আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে না গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিশ্বকাপ শিরোপা উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনা দল বিশ্বকাপ জিতেও প্রেসিডেন্ট ভবনে কেন গেল না, সেটি নিয়ে এখন চলছে নানা গুঞ্জন।
বিশ্বকাপ জিতেও আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা রাষ্ট্রপতি ভবনে আসেননি, এটি নিয়ে অবশ্য ফার্নান্দেজের কোনো খেদ নেই। একটি রেডিও স্টেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন প্রেসিডেন্ট ভবনে এসে সংবর্ধনা নেওয়ার বিষয়টি নাকি দলের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ক্লদিও তাপিয়ার কাছে আমন্ত্রণ গিয়েছিল “কাসা রোসাদায়” আসার। আসা, না আসাটা পুরোপুরি তাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা আসেনি। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ব্যাপারটি পুরোপুরি তাদেরই। আমি এতে কিছু মনে করিনি।’
এ নিয়ে জল্পনাকল্পনার কিছু নেই বলেই জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রপতি, ‘আমি একজন ফুটবল–ভক্ত মানুষ। তারা কেন কাসা রোসাদায় আসেনি, সেটি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু আর্জেন্টাইন ফুটবল দল অন্যভাবে উদ্যাপন করতে চেয়েছে। আমি জানি, আমার সঙ্গে দেখা করা, না করাটা পুরোপুরিই আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্ত ছিল ভিন্ন।’
রাষ্ট্রপতি ভবন সব আয়োজনই করে রেখেছিল। ভবনের বিখ্যাত ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জনতার সামনে বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার আয়োজন ছিল। কিন্তু সব আয়োজন শেষ পর্যন্ত বাতিল করতে হয়েছে দল সেখানে যেতে না চাওয়ায়। দল কাতার থেকে দেশে ফেরার পরদিন বুয়েনস এইরেস শহরে বিশ্বকাপ জয় উদ্যাপনে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ভবনের আয়োজন বাতিল হওয়ার আরেকটি কারণ সেটিও।
বিশ্বকাপ জয়ের গৌরবকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার কোনো ইচ্ছা প্রেসিডেন্টের ছিল না বলেও জানিয়েছে তাঁর কার্যালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, প্রেসিডেন্টের ইচ্ছা ছিল কাসা রোসাদার ব্যালকনিতে তাঁর সঙ্গে কেবল ফুটবলার আর আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা থাকবেন। সেখানে রাজনৈতিক নেতারা, এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদেরও আমন্ত্রণ না জানানোর নির্দেশ তিনি দিয়ে রেখেছিলেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই







































