• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে ভূমি অধিগ্রহনে ঘুষ

এল এ শাখার ৩০ কর্মকর্তাকে একসঙ্গে বদলী


কক্সবাজার প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০, ০৭:৩৯ পিএম
এল এ শাখার ৩০ কর্মকর্তাকে একসঙ্গে বদলী

কক্সবাজার : অবশেষে টাকার খনি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা থেকে ‘ঘুষ লেনদেনে’ জড়িত সন্দেহে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৩০ জন কর্মকর্তাকে।

আগামী ৫ মার্চের মধ্যে কর্মস্থল ত্যাগ করতে নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বদলীর আদেশ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এতে কিছুটা সন্তুষ্টি বিরাজ করলেও, ভুক্তভোগী অনেকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দায় মুক্তি হিসেবে দেখছেন গণ বদলীর আদেশকে।

তবে এত সহজেই দায়মুক্তি পাচ্ছেন না বদলীর আদেশ পাওয়া ৩০ জন কর্মকর্তা। এলএ শাখায় ঘুষ লেনদেনের সিন্ডিকেটে তারা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখতে পৃথক আদেশে তদন্ত করতে বলা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে।

২৭ ফেব্রুয়ারীর পর থেকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে সার্বিক দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তদন্তকে যাতে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য এলএ শাখার এসব কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘুষ লেনদেনে সম্পৃক্ততা পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-১ অধিশাখার উপসচিব মোছাম্মৎ মমতাজ বেগম এই আদেশ দেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার ওয়াসিম খান নামে একজন সার্ভেয়ারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে।

এ ঘটনায় আরও দুই সার্ভেয়ার এখনও পলাতক রয়েছে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া র‌্যাব-১৫ জানিয়েছিল তারা ঘুষ লেনদেনের জন্য একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সব কর্মচারিকে তাৎক্ষনিক বদলি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ প্রদান করেন।

মন্ত্রীর নির্দেশনায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপন দ্বারা আদেশ জারি করার মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত ৩০ জন কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, ৭ জন কানুনগো ও ১৯ জন সার্ভেয়ার।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে ‘বর্ণিত কর্মকর্তাগণ আগামী ৫ মার্চের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় আগামী ৫ মার্চের অপরাহ্নে বর্তমান কর্মস্থল হতে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন।’ তিন সার্ভেয়ারের বাসা থেকে ‘ঘুষের’ বিপুল টাকা উদ্ধার ও সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিম খানকে আটকের আট দিনের মাথায় এ আদেশ জারি করা হলো।

সূত্রমতে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত তিন সার্ভেয়ারের বাসা থেকে ‘ঘুষের’ বিপুল টাকা উদ্ধার ও সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিম খানকে আটক করে র‌্যাব। এসময় সার্ভেয়ারদের বাসা থেকে বিপুল সরকারি নথি, হাতে লেখা হিসাব বিবরণীর নোটবুক ও ডায়েরী, মাসোহারা গ্রহণকারীদের তালিকা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর গত রোববার কক্সবাজার সফরে আসেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ওইসময় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি ভূমি অধিগ্রহণ শাখার অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের ঈঙ্গিত দিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে এই গণবদলীর আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!