• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
লেবাননে জরুরি অবস্থা জারি

বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৫, আহত ৫ সহস্রাধিক


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ৬, ২০২০, ০১:১৬ পিএম
বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৫, আহত ৫ সহস্রাধিক

ঢাকা : লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।

কর্মকর্তারা বলছেন, মৃত্যুর এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। উদ্ধারকারীরা এখনো ধ্বংসস্তূপে হতাহতদের খোঁজছেন।

এ ঘটনায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন এবং বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আবুদ বলেছেন, আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।

এদিকে, এ ঘটনায় দেশটির বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলাকালে তাদের গৃহবন্দি করা হলো।

এই ঘটনার পর লেবাননে দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গুদামে রাখা ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে।

দেশটির কাস্টমস প্রধান বাদরি দাহের বলেছেন, এসব রাসায়নিক পদার্থ সেখান থেকে সরিয়ে নেবার জন্য তার সংস্থা বললেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।

কৃষিকাজের জন্য সার এবং বিস্ফোরক বানানোর জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়।

বুধবার মন্ত্রিপরিষদের এক জরুরি বৈঠকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিস্ফোরণের কারণে বৈরুত শহরে যে আতঙ্ক নেমে এসেছিল সেটি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পুরো শহর দুর্যোগ কবলিত হয়েছিল।’

ব্রিটেনের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে যে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল, সেটির ১০ ভাগের এক ভাগ শক্তি ছিল বৈরুত বিস্ফোরণে।

তারা বলছেন, বৈরুতের এই বিস্ফোরণ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক-বহির্ভূত বিস্ফোরণ।

সংবাদদাতারা বলছেন গুদামটিতে যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল, এবং তা ছয় বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিল।

ধারণা করা হচ্ছে ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল।

বৈরুত বন্দরের প্রধান এবং কাস্টমস প্রধান স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা জানতেন যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিপজ্জনক এবং বন্দরের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে রাখা রাসায়রিক পদার্থ রফতানি কিংবা বিক্রি করে দেবার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে একাধিকবার চিঠি লেখা হয়েছিল।

লেবাননের সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিল বলেছে, এই ঘটনার জন্য যারা দোষী হবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে।

লেবাননের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে বন্দরের যেসব কর্মকর্তা সেখানে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত রাখা, সেগুলো তত্ত্বাবধান করা এবং এর কাগজপত্র যারা দেখাশুনা করেছেন সবাইকে গৃহবন্দি করা হবে।

বৈরুত বন্দর কর্মকর্তারা গৃহবন্দি : লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশটির বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলাকালে তাদের গৃহবন্দি করা হলো।

বৈরুত কাঁপানো সেই বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত ১৩৫ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরো ৪০০০-এর বেশি। এই ঘটনার পর লেবাননে দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গুদামে রাখা ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে।

দেশটির কাস্টমস প্রধান বাদরি দাহের বলেছেন, এসব রাসায়নিক পদার্থ সেখান থেকে সরিয়ে নেবার জন্য তার সংস্থা বললেও তাতে কোন কোন কাজ হয়নি। কৃষিকাজের জন্য সার এবং বিস্ফোরক বানানোর জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়।

বুধবার মন্ত্রিপরিষদের এক জরুরি বৈঠকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট বলেন, "বিস্ফোরণের কারণে বৈরুত শহরে যে আতঙ্ক নেমে এসেছিল সেটি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পুরো শহর দুর্যোগ কবলিত হয়েছিল।"

ব্রিটেনের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে যে পারমানবিক বোমা ফেলা হয়েছিল, সেটির দশভাগের এক ভাগ শক্তি ছিল বৈরুত বিস্ফোরণে।

তারা বলছেন, বৈরুতের এই বিস্ফোরণ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পারমানবিক-বহির্ভূত বিস্ফোরণ।

সংবাদদাতারা বলছেন গুদামটিতে যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল, এবং তা ছয় বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিল।

ধারণা করা হচ্ছে ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল।

বৈরুত বন্দরের প্রধান এবং কাস্টমস প্রধান স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা জানতেন যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিপজ্জনক এবং বন্দরের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে রাখা রাসায়রিক পদার্থ রপ্তানি কিংবা বিক্রি করে দেবার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে একাধিকবার চিঠি লেখা হয়েছিল।

লেবাননের সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিল বলেছে, এই ঘটনার জন্য যারা দোষী হবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে।

লেবাননের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে বন্দরের যেসব কর্মকর্তা সেখানে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত রাখা, সেগুলো তত্ত্বাবধান করা এবং এর কাগজপত্র যারা দেখাশুনা করেছেন সবাইকে গৃহবন্দি করা হবে।

ধ্বংস্তূপে প্রাণের খোঁজে ফরেনসিক টিম : লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সমুদ্রবন্দর এলাকায় মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরো এলাকা ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে বুধবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অন্তত ১২৮ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষকে। এখনও কয়েকশ’ মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী বহু পরিবার। ধ্বংস্তূপে প্রাণের খোঁজে ফরেনসিক টিম নামিয়েছে লেবানিজ রেডক্রস।

বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, আমাদের টিম এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। লেবাননের কর্মকর্তারা বলছেন, বিস্ফোরণস্থলের ধ্বংসস্তূপ সরাতে এখনও কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় সময় বিকাল ৬টার পর পর ওই বিস্ফোরণে বৈরুত ছাড়াও আশপাশের অনেক শহর কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের তীব্রতা ছড়ায় বহুদূর পর্যন্ত। কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ঘরবাড়ির কাচ ভেঙে যায়। দেয়াল ও বড় প্রাচীরগুলো উড়ে যায়। কম্পন অনুভূত হয় ২৪০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও, সেখানকার বাসিন্দারা এ ঘটনাকে ভূমিকম্প বলে মনে করেছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড় গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি ও স্থাপনা উড়ে যেতে দেখা যায়।

প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বন্দরের এক বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণের সূত্রপাত। বিস্ফোরণের পর পরই বৈরুত যেন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে সেদিকে পড়ে আছে ভাঙা কাচ। ভবনগুলো আগুনে পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের মূল এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিস্ফোরণকে কেউ কেউ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গেও তুলনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা বলছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সমান।

বিস্ফোরণস্থলের কাছেই ২০০৫ সালে এক গাড়ি বোমা হামলায় লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি নিহত হয়েছিলেন। শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে জাতিসংঘের এক বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দেড় দশক আগের ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রায় হওয়ার কথা। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত লেবানন এমনিতেই পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ও নতুন করোনা সংকট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলের সাম্প্রতিক মুখোমুখি অবস্থানের কারণেও দেশটি নাজুক অবস্থানে আছে।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে অসংখ্য মৃতদেহ ও ধ্বংস্তূপে দেখার কথা জানিয়েছেন বিবিসির এক সাংবাদিক। হাসপাতালগুলোতে ছিল আহত ও রক্তাক্তদের উপচে পড়া ভিড়। স্থানীয় গণমাধ্যমের ছবিতে ধ্বংস্তূপের নিচে বহু মানুষকে আটকে পড়া অবস্থায় দেখা যায়।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে তার কানে তালা লেগে গিয়েছিল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড় গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় বাড়িঘরের জানালার কাচ ও বেলকনি ভেঙেও অনেকে আহত হন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এ ঘটনাকে বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন।

বিস্ফোরণের পরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। চারদিকে সারি সারি মরদেহ। দিশেহারা রক্তাক্ত মানুষ। হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না আহতদের। বিলাসবহুল হোটেল, আবাসিক ভবন সব কিছু পরিণত হয়েছে অচেনা ধ্বংসস্তূপে। আহতদের চিৎকার আর নিখোঁজের স্বজনদের দীর্ঘশ্বাসে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ। চিকিৎসা নিতে আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নেয়া হয়েছে কয়েক হাজার আহতকে। বিস্ফোরণে হাসপাতালগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। বিস্ফোরণের এই ধ্বংসলীলার মধ্যে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে লেবাননের সরকার।

সাইপ্রাস থেকে বেশ কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী টুইটারে জানিয়েছেন, তারা নিজেদের বাসভবনে বিস্ফোরণের প্রভাব অনুভব করেছেন। ইলিয়াস ম্যাভরোকফ্যালোস টুইটারে লিখেছেন, ‘সাইপ্রাসের লিমাসোলে বিস্ফোরণের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। আমাদের (ভবনের) জানালা কেঁপে উঠেছিল।’

লিমাসোলের আরেক বাসিন্দা টুইট করেছেন, ‘আমি তো খোঁজা শুরু করেছিলাম যে আমাদের এখানে বোমা হামলা হল কিনা।’ আরেক টুইটার ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, সাইপ্রাসের নিকোসিয়া শহরেও বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে এবং ‘মৃদু কম্পন’ অনুভূত হয়েছে। সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাইকোস ক্রিস্টোদুলাইদেস টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি লেবানন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং লেবাননকে যে কোনো সহায়তার জন্য সাইপ্রাস প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!