• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরের বুকে বন্ধুময় আকাশ


মো: গোলাম মোস্তফা (দুঃখু) ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯, ১১:৫৭ এএম
সাগরের বুকে বন্ধুময় আকাশ

ঢাকা : সকাল সবসময় সুন্দর হয় , যে সকালে বন্ধুময় আকাশ থাকে সেই সকাল সুন্দর না হয়ে কি পারে। প্রকৃতি মাঝে মাঝে নিয়মের সাথে খুব খেলা করে, আর সেই খেলার খেলোয়ার হয় চার পাশের মানুষ। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত আমার কাছে বিশালময় রাজ্য যেখানে নিজেকে খুব কাজ থেকে জানা যায়, কক্সবাজার অনেক বার গিয়েছি তবে আমার জীবনে এই বার যাওয়া টা ছিলো অন্যরকম ভালো লাগা ।

যে কোন বিষয় নিয়ে কাজ করার সময় আমি খুব মনোযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি, যেনো কেউ আমার কাজ টি নিয়ে প্রশ্ন না তুলতে পারে- যে কাজ টি ভালো হয়নি। কক্সবাজার যাবো সেই আনন্দ মনের গভিরতা বলছে সেখানে গিয়ে কি করবো, এমন নানান রকম চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো ।

সময় ইয়ুথ ক্যাম্প অংশগ্রহণ করার জন্য আমরা কক্সবাজার লাবনী পয়েন্টে হাজির বন্ধুময় পাঁচজন, প্রথম প্রথম অনেক খারাপ লাগছিলো। যখন রাত ১২টা হতে লাগলো শাহজান ভাই বললো চলেন বিচে যাই, আমি আর না করতে পারলাম না আমরা দুজন যাওয়ার পাঁচ মিনিট পর হাজির জমির ভাই। উনি হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন আপনারা আমাকে রেখে চলে আসতে পারলেন, শাহজান ভাইয়ের সহজ সরল উত্তর আমরা এখানে কবিতা শুনবো আর সাগরের নিরবতা দেখবো তাই কাউকে না বলে চলে আসছি । তুমি যেহেতু চলে আসছো তাহলে এখানে চুপ করে বসো , এখন দুঃখু ভাই কবিতা আবৃক্তি করবে।

সাগরের নিরবতা আমাকে ভাবনায় ফেলে দেয়! সাগর যখন নিরব থাকে তখন মনে হয় সাগর বড় অসহায়! কবিতা আবৃক্তি শুরু করবো যখন দূর থেকে আওয়াজ করে একজন আসতেছিলো আমাদের দিকে। কাছে আসার পর বুঝতে পারলাম উনি আর কেউ নয় আমাদের কৌশিক (জমির ভাই মজা করে উনাকে মেয়েদের প্রাণের রাজ পুত্র বলে)।

কৌশিক কে বললাম তুমি চুপ করে এখানে বসো কবিতা আবৃক্তি শেষে তোমার সাথে কথা বলবো।

কবিতা আবৃত্তি শেষ হওয়ার সাথে সাথে আসলো জাহিদ ভাই , আসার পর থেকে বকে যাচ্ছে । কেন আমরা উনাকে না বলে এখানে চলে আসছি - শাহজান বললেন আপনাকে বললে তো আসা হতো না  । তাই না বলে চলে আসছি , এই কথা শুনার পর জাহিদ ভাই রেগে গিয়ে গান শুরু করলে।

কৌশিক সাথে সাথে একি গানে সুর মেলাচ্ছেন, তখন রাত বাজে দুইটা সাগর পাড়ে মানুষ কমে যাচ্ছে । চার পাশের পরিবেশ তখন নিরব আর সাগরের পানির কোন শব্দ নেই, বাতাসে তেমন শীতলতা নেই। সব মিলিয়ে গানের আসর কে মনে হচ্ছিলো সাগরের বুকে আজ বিশালতা নেমে আসছে!

রাত যখন চার টা বাজলো শাহজান ভাই বললো আজ এই পর্যন্ত থাক, সকালে আমাদের সেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে , সকলে একমত হয়ে রুমে চলে আসলাম।

দুই রাত তিন দিন ছিলাম সাগরের বিশাল রাজ্যে। কখনো একবারের জন্য মনে হয়নি আমি একা, যেদিন চলে আসবো চট্টগ্রামে মনে হচ্ছিলো বড় একা আমি, কৌশিক, জমির, শাহজান, জাহিদ কোন কথা বলছে না সবাই নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

গাড়িতে উঠার পর সবাই একসাথে বসলাম পাশা পাশি সিটে, শাহজান ভাই বার বার বলছিলেন জীবনের সবচেয়ে ভালো সময় গেলো কয়েক দিন। জমির সাথে সাথে বললো মুস্তফা ভাই আমরা কি আবার এক হতে পারবো?  জাহিদ ভাই বললেন কেন পারবো না।

আমাদের সকলের পরীক্ষা শেষে আমরা সবাই আবার এক সাথে আসবো, সবার বলা শেষে আমি বললাম জীবনে ভালো চারজন মানুষ পেলাম। আমি চাই যে যেখানে থাকি না কেন সবসময় যোগাযোগ রাখবো, আর আমাদের এই সুন্দর ভালো লাগা নতুন করে সর্ম্পক তৈরি হওয়া পাঁচজনের জন্য একটি নাম দেওয়া যায়।

সবাই বললো তুমি নাম দাও,  আমি ও সাথে সাথে বলে ফেললাম ‘বন্ধুময় আকাশ’ নাম টি কেমন লাগে , সবাই জুরে আওয়াজ দিয়ে বললো অনেক সুন্দর নাম। গাড়ি শহরে চলে আসলো, বিষন্নতা মন নিয়ে সবাই বাড়ি ফিরলাম। মন রয়ে গেলো সাগরের ঢেউয়ের কাছে পাঁচ বন্ধুময় আকাশ।

লেখক: বিতার্কিক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা বিভাগ, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলশী, চট্টগ্রাম

Wordbridge School
Link copied!