• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আরাকানে সরেজমিন পরিদর্শন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক অক্টোবর ১১, ২০১৭, ১১:২০ পিএম
আরাকানে সরেজমিন পরিদর্শন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমারে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান। মিয়ানমার সরকারের উদ্যোগে মঙ্গলবার(১০ অক্টোবর) রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে, স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে, সরকারি দোভাষীদের সাহায্যে।

মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।  মিয়ানমারের শীর্ষ মন্ত্রী ও কর্মকর্তারাও এসময় সঙ্গে ছিলেন। বাংলাদেশে সফর করা অং সান সু চির মন্ত্রীও ছিলেন তাদের সঙ্গে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সঙ্গে চীন, ভারত, বাংলাদেশ, লাওস ও থাইল্যান্ডের সীমান্ত রয়েছে। এই পাঁচ দেশের রাষ্ট্রদূতরা গিয়েছিলেন আরাকানে।

মিয়ানমারে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান

এর আগে গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের এ পরিদর্শনের কথা জানিয়েছিলেন।

মন্ত্রী বলেছিলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এমন পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের আরাকানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সরকার। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে বলেছি যাওয়ার জন্য। বলেছি, অবশ্যই আপনি যাবেন। এটা হয়তো দু-একদিনের মধ্যে হবে।

সেই সফর সেরে ফেরার পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, রাখাইনে গিয়ে তিনি বাস্তুচ্যুত বহু রোহিঙ্গার মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা দেখেছেন। তারা নিজেদের গ্রামে আর ফিরে যেতে চায় না বলেও তাদের জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেছেন সেখানে যেভাবে ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে তা হঠাৎ করে ঘটেনি। গোটা অঞ্চল জুড়ে আমি মাইলের পর মাইল ধরে যে পোড়া-বাড়িঘর দেখেছি, তা চোখে না-দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। 

পাঁচ দেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বৌদ্ধপ্রধান রাথিডং এলাকার একটি গ্রামে। যেখানে একটি বিচ্ছিন্ন গ্রামে কিছু মুসলিম রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। তারপর রাখাইনের সাগরপাড়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম দেখেছেন আকাশপথে হেলিকপ্টারে চেপে। সেখানে তাদের মাটিতে নামানো হয়নি।

অন্য এলাকায় নিয়ে কয়েকটি জায়গায় তাদের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। সব জায়গাতেই স্থানীয় মানুষজনের সাথে তাদের কথাবার্তা হয়েছে সরকারি দোভাষীদের মাধ্যমেই। কথোপকথনের সময় সরকারি কর্মকর্তারাও সেখানে হাজির ছিলেন।

সুফিউর রহমান বলেছেন, এই মানুষগুলোর চোখেমুখে ছিল চরম নিরাপত্তাহীনতার ছাপ। তারা বলছিলেন তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা। নিজের গ্রাম থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এই মানুষেরা, তবে তার পরেও তারা যে সেখানে আর ফিরতে চান না সে কথা আমাদের খোলাখুলিই বললেন।

তবে মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা একটু আড়াল হলেই তাদের কথাবার্তা থেকে একটু অন্যরকম আভাসও পাওয়া যায়। বিভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে বুঝা যায়, নির্যাতনের কথা সবার সামনে বলতে পারছেন না। 

সেই আভাসটা কী ধরনের, এই প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান বলেছেন, তারা যে কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারেন না বলে মনে হয় সেটা হল তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তা শুধু একটা প্রতিবেশী ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাজ হতে পারে না।

এর পেছনে প্রাতিষ্ঠানিক(সেনাবাহিনী ও সরকার) হাত রয়েছে বলেও তাদের কথা থেকে ইঙ্গিত মেলে, কিন্তু সাহসে ভর করে তারা কারও নাম উচ্চারণ করতে পারেন না বলে বুঝতে পেরেছেন বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রদূত।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!