• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬২ হাজার পশু


নীলফামারী প্রতিনিধি জুলাই ২৫, ২০১৭, ০৪:৫০ পিএম
কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬২ হাজার পশু

ফাইল ছবি

নীলফামারী: আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে নীলফামারী জেলার পশু খামার ও বাসা-বাড়িতে প্রায় ৬২ হাজারেরও অধিক পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভারত থেকে গরু আসা কমে যাওয়ায় এবং ভালো দাম পাবার আশায় জেলার অধিকাংশ খামারি নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কোরবানির বাজার ধরার জন্য এ পশু পালন করছেন।

ভারতীয় গরুর উপর নির্ভর না করে নিজেদের গরুতেই কোরবানির চাহিদা মেটানোসহ লাভের আশায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার খামারি ও ব্যক্তিরা।

এছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে নীলফামারীর বিভিন্ন পশুর হাট নিয়ে নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়েছে। কোথাও কোরবানির পশুর হাট জমে না উঠলেও ইতোমধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বেপারিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশু অনুযায়ী দরদাম করে আসছেন।

নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, কোরবানির পশু বিক্রির উদ্দেশ্যে এই জেলার ছয় উপজেলায় ১৭ হাজার ৫৮৬টি বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারে ৪৭ হাজার ৭৮৬টি পশু কোরবাণীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও কেউ বেকারত্বের অভিশাপ ঘোঁচাতে আবার কেউ সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে এসব খামার গড়ে তুলেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নীলফামারী জেলার ছয় উপজেলায় এবার ঈদে কোরবানির পশুর চাহিদা ৬১ হাজার ৬৬৭টি। এর মধ্যে গরু প্রস্তুত রয়েছে ৪৭ হাজার ৭৮৬টি। এদের মধ্যে ষাঢ়ের সংখ্যা ৩৫ হাজার ২৬৫টি, বলদ ৫ হাজার ৮১টি ও গাভী রয়েছে ৭ হাজার ৪৪০টি। স্থানীয় সরকারি পশু চিকিৎকদের সহযোগিতায় এ বছর এসব পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও ৫ হাজার ৪২৬টি খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে ১১ হাজার ২০৪টি এবং ৬৪২ খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে ২ হাজার ৬৭৭টি।

কোরবানিতে দেশি জাতের ও শংকর জাতের গরু চাহিদা বেশি থাকায় খামারিরা এ ধরনের গরু স্বাস্থ্য সম্মতভাবে মোটা তাজাকরণ শুরু করেছেন বছর ধরে।

এদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বেপারিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশু অনুযায়ী দরদাম করে কিনতে শুরু করেছেন। তবে পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় পশু লালন পালন করতে এবার খরচও হয়েছে অনেক বেশি। সেই কারণে গত বারের তুলনায় এবার পশুর দামও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সৈয়দপুরের নয়াটোলা মহল্লার খামারী ইউসুফ সোনালীনিউজকে জানান, গত দেড় বছর ধরে তিনি তার নিজ বাড়িতে একটি ষাঁড় লালন-পালন করছেন। ইতোমধ্যে বেপারি ও ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে ৮৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকিয়েছেন। আরও দাম বৃদ্ধির আশায় তিনি এত তাড়াতাড়ি গরু বিক্রির কথা ভাবছেন না।

নীলফামারী জেলা সদরের হাড়োয়ার মোস্তাক, ডোমারের বোড়াগাড়ির সোনালীনিউজকে মিজানুর, ডিমলার পূর্ব ছাতনাইয়ের লিটন সরকারসহ একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছর ধরে দেশের আমিষ খাদ্যের চাহিদা পূরণ এবং আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন তারা। পশু খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং বর্ষা মৌসুমে পানিতে মাঠ ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। এ জন্য ব্যয়ও বেড়ে যায় অনেক। এরপরেও খামারিরা ঈদকে ঘিরে লাভের আশায় পশু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখেন। তবে ঈদ উপলক্ষে ভারত থেকে পশু আমদানি করা হলে লোকসানের মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

নীলফামারী সদরের ইটাখোলার খামারি মঈনুল ইসলাম আশঙ্কা প্রকাশ করে সোনালীনিউজকে জানান, গত এক বছর ধরে তিনি ১০টি গরু তার খামারে লালন-পালন করছেন। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ব্যয় বেড়েছে। ভারত থেকে গরু আমদানি করা হলে দেশি গরুর দাম কমে যেতে পারে। আর এতে করে তিনি লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।

নীলফামারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহজাহান খন্দকার সোনালীনিউজকে জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে এবার নীলফামারী জেলা গরুর খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে যে পরিমাণ গরু লালন-পালন করছেন তাতে ঈদে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটানোর পরেও উদ্বৃত্ত থাকবে। যা রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাতে পারবেন খামারিরা।

তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম উপায়ে যাতে করে কোনো খামারি গরু মোটাতাজা করতে না পারে সেজন্য আমাদের মাঠকর্মীরা জেলার ছয় উপজেলায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!