• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাসিরের দোষ কী?


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭, ০৭:৪৪ পিএম
নাসিরের দোষ কী?

ঢাকা: এক সময় জাতীয় দলে ছিলেন নিয়মিত মুখ, মূল একাদশের অপরিহার্য সদস্য, অনেক ম্যাচে জয়ের নায়ক নাসির হোসেন কেন জাতীয় দলে নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্ন। সুযোগ পেলেই সাংবাদিকদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চান নাসির ভক্তরা। কিন্তু এর জবাব দিতে পারে একমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

সর্ব শেষ ভারত সফরেও দলে জায়গা হয়নি নাসিরের। ছিলেন না নিউজিল্যান্ড সফরেও। বাংলাদেশ দল যখন নিউজিল্যান্ড সফরে ছিল ঠিক সে  সময় ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন নাসির হোসেন। সেই পারফরম্যান্সের পুরস্কার স্বরুপ তাকে প্রাথমিক  দলেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি নাসিরের। অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ডাবল সেঞ্চুরির পুরস্কার হাতেনাতে পেয়েছেন লিটন দাস। ভারত সফরের বাংলাদেশের  ১৫ সদস্যের দলে ফিরেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলে থাকলেও একাদশে জায়গা হয়নি নাসিরের।  ‘টিম কম্বিনেশনের’ দোহাই দিয়ে তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছে সাইডবেঞ্চে। ফলে দল থেকে বাদ পড়া, ভালো পারফরম্যান্স করেও সুযোগ না পাওয়া, জনপ্রত্যাশার চাপে ফের দলে অন্তর্ভূক্তি, তাকে নিয়ে  বোর্ডকর্তাদের নানা মন্তব্য- এমন বিভিন্ন কারণে সমসময় বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক আলোচিত চরিত্র নাসির হোসেন।বার বার ব্যর্থ হলেও সুযোগ পাচ্ছেন সৌম্য আর শুভাগত হোম।

নাসিরের প্রতি কেনো এতো অনীহা? এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা গুঞ্জন। কোচ-নির্বাচকরা দিচ্ছেন নানা মতবাদ। এমনকি বাদ যাননি খোদ বিসিবি প্রেসিডেন্টও। ‘নাসির গত দুই বছরে এমন কী পারফরম্যান্স করেছে যে তাকে আমি নেবো’ আর ‘যে ক্রিকেটার ঢাকা লিগে ভালো পারফর্ম করতে পারে না, তাকে জাতীয় দলে নেয়ার যৌক্তিকতা আছে?’এ কথায় বিশাল আপত্তি সমর্থকদের।

গত বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে টুর্নামেন্ট হয়েছে তিনটি জাতীয় লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। জাতীয় লিগে গত আসরে ৪ ম্যাচ খেলেছেন নাসির। আর তাতে ৭ ইনিংস ব্যাট করে ৪২.৪২ গড়ে রান করেছেন ২৯৭; সর্বোচ্চ ৯৬ রান। আর ১ ম্যাচ খেলে ৫৬ রান ও ৬টি উইকেট পেয়েছেন শুভাগত।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১৬ ম্যাচে ১২ ইনিংস খেলে ৭৫.৪২ গড়ে ৫২৮ রান; সর্বোচ্চ ৯৭ রান। আর ১৬ ম্যাচে নাসিরের চেয়ে দুই ইনিংস বেশি খেলে ৬০ গড়ে ৩০৯ রান করেছেন শুভাগত হোম। পাশাপাশি ১৬টি উইকেট পেয়েছেন শুভাগত। তবে তার চেয়ে দুটি উইকেট কম পেয়েছেন নাসির।

বাংলাদেশের সবচেয়ে জমজমাট লিগ বিপিএলে শুভাগতর চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিলেন নাসির। ১৪ ম্যাচে ১০ ইনিংস ব্যাট করে ১৯.৫০ গড়ে ১৯৫ রান করেছেন নাসির, সর্বোচ্চ ৪৩*। আর ওভার প্রতি ৭.৯০ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৪টি।

এবার আসি ২০১৪-১৫ মৌসুমের পারফরম্যান্সের ফলাফল নিয়ে। এ মৌসুমে জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য থাকায় জাতীয় লিগে কোন ম্যাচ খেলেননি নাসির। তবে ৬ ম্যাচে ৯ ইনিংস খেলে ৫৯ গড়ে ৪৭২ রান করেন শুভাগত, সর্বোচ্চ ১৩৫ রান। পাশাপাশি ২১টি উইকেট নেন তিনি।

তবে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলেছেন দুইজনই। ১৬ ম্যাচে ১৫ ইনিংস ব্যাটিং করে ৫০ গড়ে ৫৫০ রান করেন নাসির, সর্বোচ্চ ১০৪ রান। পাশাপাশি ওভার প্রতি ৩.৫২ রান দিয়ে ১৩টি উইকেট শিকার করেন তিনি। আর নাসিরের চেয়ে ৩ ম্যাচ কম খেলে ২৭ গড়ে ৩০২ রান করেন শুভাগত, সর্বোচ্চ ৫১*। তবে বল হাতে ২টি উইকেট বেশি নিয়েছেন তিনি।

এরপর বছরের শেষ টুর্নামেন্ট বিপিএলে যথারীতি এগিয়ে নাসির।  ১১ ম্যাচে ১৯.৩০ গড়ে ১৯৩ রান করেছেন তিনি, সর্বোচ্চ ৩৩ রান। আর ওভার প্রতি ৫.০৪ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৬টি। আর নাসিরের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে ১১.৭৫ গড়ে রান করেছেন ৯৪, সর্বোচ্চ ৩০। আর বল হাতে ওভার প্রতি ৬.৭৫ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৫টি। অর্থাৎ পরিসংখ্যানের বিচারে যোজন যোজন এগিয়ে নাসির। কোচ-নির্বাচকরা যে যুক্তি দিচ্ছেন তা তাতে ফাঁক থেকেই যাচ্ছে। তবে কোচ-নির্বাচকদের দৃষ্টিতে জাতীয় দলের খেলার যোগ্যতা না রাখলেও দর্শকদের মন জয় করেই চলেছেন নাসির। সামাজিক মাধ্যমে নাসিরের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে যাচ্ছেন ভক্ত সমর্থকরা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!