বরিশাল: বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার এলাকায় সন্ধ্যা নদীর ভাঙন যেন এক মহাদুর্যোগে রূপ নিয়েছে।
দিনের পর দিন গ্রাস করছে ঘরবাড়ি, বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এলাকার অস্তিত্ব। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ।
সোনাহারের হক সাইবের হাট এক সময়ের জমজমাট বাজার। আজ সেই বাজার আর আশপাশের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি একে একে সন্ধ্যা নদীর গর্ভে মিলিয়ে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিক ভাঙনে ইতিমধ্যে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে, এখন হুমকির মুখে এলাকার একমাত্র ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠান আবুল কাসেম মাস্টার দারুল আরকাম ইবতেদায়ী ও নূরানী মাদ্রাসা।
মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এই এলাকায় আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি। আজ নিজের চোখের সামনে সবকিছু নদীতে বিলীন হতে দেখছি। মাদ্রাসার সামনে এখন নদীর গতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আর যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী বর্ষা আসার আগেই এই প্রতিষ্ঠান নদীর গর্ভে চলে যাবে।
তিনি জানান, বিগত ৫-৭ বছরে প্রায় দেড়-দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন হয়েছে। এলাকাবাসি বহুবার মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও আবেদন জানিয়েছে, কিন্তু সাড়া মেলেনি। ফলে নদীর ক্ষুধা বেড়েই চলেছে।
ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বহু বাড়িঘর ফাঁকা পড়ে আছে। অনেক পরিবার তাদের শিশুসন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দূরের আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা খোলা মাঠে। দিনে দিনে সোনাহারের মানুষ আতঙ্কে, ক্ষোভে, অসহায়ত্বে ক্লান্ত।
এলাকাবাসী আবদুল আলিম বলেন,যে ঘরটাতে বাবা-মার আশীর্বাদ নিয়ে সন্তানদের নিয়ে সংসার করতাম, সেটা এখন নদীর মধ্যে। আমরা শুধু চোখের পানি ফেলছি। আমাদের কান্না কেউ শুনছে না।
তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যদি আজই সন্ধ্যা নদীর ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে হক সাইবের হাটসহ পুরো চাখার ইউনিয়নের বড় একটি অংশ মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বাধ্য।
তারা অবিলম্বে জিও ব্যাগ ফেলা, পাইলিং ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়েছে।
এআর







































