চাটখিল: গত বছরের ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীও দেশ থেকে পালিয়ে যায়। পাশাপাশি সারাদেশে অবৈধ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাও গা ঢাকা দেয়।
কিন্তু নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার ০৯ টি ইউনিয়নের ফ্যাসিস্টের দোসর এসব অবৈধ চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বহাল তবিয়তে থেকে এখনো দলের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ১৫ আগস্ট নোয়াখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী মানিকের নেতৃত্বে এবং নোয়াখলা ইউনিয়ন ও মোহাম্মদপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাহালুলের নেতৃত্বে উক্ত ইউনিয়নে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। যা নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।
রামনারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বাহার বোর্ড অফিস, দলীয় কার্যক্রম এবং সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সমান্তরালভাবে। এভাবে অন্যান্য চেয়ারম্যান মেম্বাররাও দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চাটখিল উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এডভোকেট মো.হানিফের ছত্রছায়ায় চেয়ারম্যান ও মেম্বারররা বহাল তবিয়তে থেকে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানায়, বিগত ১৭ বছর এডভোকেট হানিফ আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলেছে। আন্দোলন সংগ্রামে তার তেমন কোনো ভূমিকাই ছিল না। বেশিরভাগ সময় তিনি জেলা শহর মাইজদীতে থাকতেন। মাঝেমধ্যে চাটখিল আসলে নিজেকে সেভ করার জন্য চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি জাকির হোসেন জাহাঙ্গীরের চাটখিল দক্ষিণ বাজারস্থ বাসায় এবং তার ছত্রছায়ায় থাকতেন।
এছাড়া ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে চাটখিল বদলকোট ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর জাহাঙ্গীরের মধ্যস্থতায় কুমিল্লার একটি হোটেলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সোলাইমান শেখকে মাঠ ছেড়ে দেন। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল।
তাই ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর এর প্রতিদান স্বরুপ সাবেক সেক্রেটারি ও বাড়িওয়ালা জাকির হোসেন জাহাঙ্গীরের অনুরোধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জানায়, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা পালিয়ে যাওয়ার পর এডভোকেট হানিফ ফোনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে বোর্ড অফিসের তালা খুলে দিতে এবং তাদের কোনরূপ বাধা না দিতে হুমকি দেয়।
এছাড়া চাটখিল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ ভাংগিয়ে চাঁদাবাজির ভাগ, থাইলেন্ডী জুয়ার ভাগসহ বিভিন্নভাবে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। এসব ব্যাপারে নেতাকর্মীরা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নিকট অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয় নি।
দলের এক নির্যাতিত কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় মামলা সংক্রান্ত কাজে দলীয় উকিল হিসেবে তার কাছে গেলে সুবিধার পরিবর্তে বাড়তি টাকা দিতে হতো।
এসব অভিযোগের বিষয়ে এডভোকেট হানিফের নাম্বারে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এআর







































