ছবি: প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম নগরে একের পর এক প্রকাশ্যে গুলি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের ‘দেখামাত্র ব্রাশফায়ার’ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে এই মৌখিক নির্দেশ দেন তিনি।
সিএমপির একাধিক সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে কয়েক দফায় কমিশনার এই নির্দেশনা পাঠান। নির্দেশনায় বলা হয়, টহল ও থানা পুলিশের টিমগুলোর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী বা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন গান (এসএমজি) দিয়ে ব্রাশফায়ার চালাতে হবে।
সূত্রগুলো জানায়, বেতার বার্তায় কমিশনার নির্দেশ দেন, “শটগান হবে না, চায়না রাইফেলও বাদ — এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।” টহল টিমগুলোকে এসএমজি ছাড়াও শিশা শটগান, দুটি গ্যাস গান এবং টিম ইনচার্জদের নাইন মিমি পিস্তল বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী চেকপোস্টের সংখ্যা সাত থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করার নির্দেশ দেন তিনি।
বেতার বার্তায় কমিশনার সদস্যদের আত্মরক্ষার অধিকার ও দণ্ডবিধির বিধান স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, এ নির্দেশের দায়-দায়িত্ব তিনি নিজেই গ্রহণ করবেন।
সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলি করে হত্যার স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করি বাহিনীর সদস্যরা তা পালন করবেন। চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেব না।’
তিনি আরও বলেন, “জনসংযোগের ভেতরে ঢুকে যেভাবে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে একজনকে হত্যা করা হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। শটগান ও চায়না রাইফেল টহল থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে; এর পরিবর্তে চায়না অটোমেটিক সাবমেশিন গান বহন করা হবে।”
নাগরিক সমাজ ও আইনজীবী মহলের একাংশ এই কঠোর নির্দেশনাকে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় মনে করলেও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের নির্দেশ অপব্যবহার ও নিরস্ত্র নাগরিকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আইনজীবীদের মতে, নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি হলেও তা আইনের সীমা ও মানবাধিকারের নীতির মধ্যে থেকেই করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের জন্য স্পষ্ট নিয়ম ও জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকলে এ ধরনের নির্দেশ ‘নির্বিচারে গুলি’ বা ‘তাৎক্ষণিক বিচার’-এর সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করতে পারে।
এসএইচ







































