• ঢাকা
  • সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের আমানত দিতে নতুন পরিকল্পনা


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের আমানত দিতে নতুন পরিকল্পনা

ঢাকা: দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের আমানতকারীদের সুরক্ষায় বিশেষ পেমেন্ট স্কিম প্রণয়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একীভূত হওয়ার পর ব্যাংকগুলো দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংকে রূপ নেবে।

তথ্যানুসারে, এখন পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত আমানত ১.৫২ লাখ কোটি টাকা, আর প্রদত্ত ঋণ ছাড়িয়েছে ২ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৪৬ হাজার কোটি টাকা ব্যক্তি আমানতকারীদের, বাকিটা প্রাতিষ্ঠানিক আমানত।

'ফেরতের ক্ষেত্রে ব্যক্তি আমানতকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরা নগদ অর্থের বদলে নবগঠিত ব্যাংকের শেয়ার পেতে পারেন।'

প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যক্তি আমানতকারীরা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বীমাকৃত অর্থ পাবেন। যা আমানত আইনের খসড়া সংশোধনীতে প্রস্তাব করা হয়েছে এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, লাইসেন্স বাতিলের দুই মাসের মধ্যেই এই অর্থ ফেরত দিতে হবে।

জানা যায়, ২ লাখ টাকার বেশি অংশ ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়া হবে, যদিও সময়সীমা চূড়ান্ত হয়নি। একীভূতকরণের সময় আমানতকারীরা ৪ শতাংশ হারে রিটার্ন পাবেন। তবে বিদ্যমান সব আমানত স্কিম বাতিল হয়ে যাবে। 

একাধিক ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকলেও তা একত্রে গণনা হবে, এবং সর্বোচ্চ বীমা সীমা থাকবে ২ লাখ টাকা। এর বেশি অর্থ ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়া হবে। ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে আগের নিয়মই বহাল থাকবে।

একীভূত হওয়ার পর নতুন ব্যাংকের সম্পদ দাঁড়াবে প্রায় ২.২০ লাখ কোটি টাকা। এর পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ২০ হাজার কোটি আসবে সরকার থেকে, ১০ হাজার কোটি ডিপোজিট ইনসুরেন্স ফান্ড থেকে এবং ৫ হাজার কোটি টাকা আসবে আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি) থেকে। তবে এ বৈদেশিক সহায়তা শেষ পর্যন্ত করদাতাদের অর্থেই পরিশোধ করতে হবে।

একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে চারটি দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রুপটি সমালোচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, একীভূতকরণের সময় এসব ব্যাংকের এমডির পরিবর্তে প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। তারা প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করবেন, বোর্ড থাকবে নিষ্ক্রিয়। পাঁচ ব্যাংকই বর্তমানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত। তবে একীভূত হওয়ার পর এগুলো ডিলিস্ট করা হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা আছে, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণের অধিকারী নন। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করছে। এ নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে বৈঠক হবে।

এদিকে শেয়ারদর ইতোমধ্যেই বড় পতনের মুখে পড়েছে। পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার বর্তমানে ১০ টাকার ফেইস ভ্যালুর বিপরীতে ৫ টাকারও নিচে লেনদেন হচ্ছে। আগস্ট পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং ছিল ৬৫ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৩১.৪৬ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১৮ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকে ৩৯.২৮ শতাংশ এবং ইউনিয়ন ব্যাংকে ৩১ শতাংশ।

এআর

Wordbridge School
Link copied!