দুর্গাপূজা উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ইয়াশ রোহান। বিজয়া দশমীর দিন নিজের ফেসবুক পেজে দুর্গা প্রতিমার সামনে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি, যেখানে তাকে সিঁদুর পরা অবস্থায় দেখা যায়। এরপরই নেটিজেনদের একাংশ তার ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে কটাক্ষ শুরু করে এবং নাটক বয়কটের ডাক দেয়।
পোস্টটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯৭ হাজারের বেশি রিঅ্যাকশন এবং ২০ হাজারের বেশি মন্তব্য জমা পড়েছে, যার বড় অংশ নেতিবাচক।
আবু হানিফ নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘ভাই, আপনার নাটক অনেক দেখেছি। আজ থেকে দেখা হবে কিনা জানি না। কারণ ভাবছিলাম আপনি মুসলিম।’
জবাবে ইয়াশ সংক্ষেপে বলেন, ‘দেখেন, যেটা ভালো মনে করেন।’
কনজ্যোতিকা আফরিন নামে আরেকজন ব্যঙ্গাত্মকভাবে লেখেন, ‘ইয়ে ডান্ডি আগে জানতাম না তো।’ উত্তরে ইয়াশ কেবল “Thank you” লিখে প্রতিক্রিয়া জানান।
যদিও নেতিবাচক মন্তব্য ছিল সংখ্যায় বেশি, অনেকেই আবার ইয়াশ রোহানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। চিত্রনাট্যকার নাসির খান নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে লেখেন, ‘মূর্খদের কারণে এই দেশ কখনো সামনের দিকে এগোতে পারবে না। ফেসবুককে টিকটকের মতো ব্যবহার করছে একশ্রেণির মানুষ।’
একজন সচেতন নাগরিক জসিম উদ্দীন লিখেছেন, ‘কমেন্টগুলো পড়ে আমি সত্যিই স্তব্ধ হয়ে গেছি। আমাদের সমাজ কতটা নিচে নেমে গেছে, তা ভেবে কষ্ট লাগে। মানুষকে কখনো ধর্ম দিয়ে বিচার করা উচিত নয়—বরং তার কর্ম, মানবতা আর নৈতিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিত। এদের মতো সংকীর্ণ মানসিকতার কারণে আজ সারা পৃথিবীতে হানাহানি, খুনাখুনি বেড়ে যাচ্ছে, আর বিশেষ করে মুসলমানদের প্রতিও বিদ্বেষ তৈরি হচ্ছে। অথচ ইসলাম শান্তির ধর্ম, ভ্রাতৃত্ব ও অন্যকে সম্মান করার শিক্ষা দেয়। দুঃখজনক যে, এরা মুসলমান হয়েও ইসলামের মূল শিক্ষার থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে।’
সাংবাদিক লিটু হাসান বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা কতটা সংকীর্ণ মনস্ক হয়ে গেছি! নাটক দেখেও এখন ধর্ম খোঁজা হয়।’
বিভিন্ন সহকর্মী ও শোবিজ অঙ্গনের মানুষ ইয়াশ রোহানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, একজন শিল্পীর ধর্ম নয়, বরং তার কাজই আসল পরিচয়। তারা মনে করছেন, শিল্পের জগতে ধর্মীয় পরিচয় তুলে আনা একধরনের অসহিষ্ণুতা, যা সমাজে বিভাজন তৈরি করে।







































