• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক সীসা, আপনার সন্তান কি নিরাপদ?


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৭:৫৭ পিএম
শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক সীসা, আপনার সন্তান কি নিরাপদ?

ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশে প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে চারজনের রক্তে সীসার মাত্রা উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এছাড়া ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ৩৮ শতাংশ এবং গর্ভবতী নারীদের প্রায় ৮ শতাংশের দেহে সীসার মাত্রা নিরাপদ সীমার চেয়ে বেশি। ঢাকায় এই মাত্রা সবচেয়ে বেশি, ৬৫ শতাংশের বেশি।

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফ যৌথভাবে পরিচালিত এমআইসিএস-২০২৫ জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রায় ৬৩ হাজার পরিবারের ওপর ভিত্তি করে জরিপটি শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সুরক্ষা ও বিকাশের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছে। এতে ১৭২টি মানদণ্ড এবং ২৭টি এসডিজি সূচক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বাল্যবিয়ে ও শিশু মৃত্যুহার কমেছে, তবে সীসা দূষণ, শিশুশ্রম এবং বেড়ে চলা সিজারিয়ান হার শিশু ও নারীর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকা ও বিকাশকে সম্মান করা হলে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার বলেন, এবারের এমআইসিএসে প্রথমবারের মতো গর্ভবতী নারী ও অল্পবয়সী শিশুদের মধ্যে অ্যানিমিয়া এবং ভারী ধাতু দূষণের মাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে।

জরিপের ফলাফল থেকে দেখা গেছে, দেশের শিশুদের অর্ধেকের বেশি ধনী এবং ৩০ শতাংশ দরিদ্র পরিবারের শিশুদের দেহে সীসার মাত্রা নিরাপদ সীমার চেয়ে বেশি। এছাড়া কম ওজনের শিশুর হার ২০১৯ সালের ৯.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ১২.৯ শতাংশে পৌঁছেছে। মায়েদের অ্যানিমিয়া এখনও ৫২.৮ শতাংশে রয়েছে।

শিশু সুরক্ষা ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনক চিত্র দেখা দিয়েছে। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে শিশুশ্রমের হার বেড়ে ৯.২ শতাংশে পৌঁছেছে। ৮৬ শতাংশ শিশু কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছে। বাল্যবিয়ের হার কমলেও এখনও প্রায় অর্ধেক মেয়ের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়।

নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা ৩৯.৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে ৮০ শতাংশের বেশি পানি ই.কোলাই ব্যাকটেরিয়ায় দূষিত। স্বাস্থ্য সূচকগুলোও ঝুঁকি নির্দেশ করছে-নবজাতকের মৃত্যুহার প্রতি এক হাজার জীবিত জন্মে ২২, প্রসবের সময় সিজারিয়ান হার বৃদ্ধি, এবং মাত্র ৪৬ শতাংশ নারী গর্ভধারণের প্রথম চার মাসে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৮০ শতাংশ থাকলেও উচ্চতর স্তরে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কমে গেছে। ৬ থেকে ৭ শতাংশ শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, এমআইসিএস-২০২৫-এর তথ্যের ভিত্তিতে সরকারকে নীতি প্রণয়নে সহযোগিতা করবে। প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকা ও বিকাশে সহায়ক বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এসএইচ 


 

Wordbridge School
Link copied!