• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

এখনো কমেনি চালের দাম


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৩০, ২০২২, ১১:৫৯ এএম
এখনো কমেনি চালের দাম

ঢাকা : আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে। দাম কমতে সপ্তাহখানেক লাগবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর আগে অস্থিতিশীল চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়।

এছাড়া রেগুলেটরি ডিউটি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি করতে পারবে মাত্র ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে। সরকারের প্রত্যাশা এবার বাজারেরও চালের দাম কমবে।

কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছে, বাজারে এর প্রভাব পড়তে কমপেক্ষ এক সপ্তাহ লাগবে। নতুন আমদানি করা চাল বাজারে না এলে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশ রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম বাবু বলেন, চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আরো আগে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ ডলার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় এখন আমদানিতেও খরচও বেশি।

তিনি বলেন, আমদানি চাল বাজারে আসতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী ও বাড্ডা-রামপুরার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা প্রতিকেজি। ২৮-২৯ নম্বর চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯৫ টাকা (মান ভেদে) কেজিতে। নাজির বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। আর চিনিগুঁড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে। বাসমতি, আতপচাল বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

বাজারে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করেছে সরকারের বাজার মনিটরিং প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। টিসিবির তথ্য মতে, গতকাল বাজারে সবচেয়ে মোট চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। অর্থাৎ এ সপ্তাহে মোটা চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে গত এক মাসের হিসাবে দাম বেড়েছে ৮ টাকার মতো।

আর পাইজাম চালও কেজি প্রতি ১ থেকে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও আগে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া সরু নাজির চাল এ সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মেসার্স শাহানা স্টোরের মনোয়ার হোসেন বলেন, চালের দাম খুব বেশি কমার সম্ভবনা নেই। যদিও কমে তবে, অল্পকিছু কমবে। কারণ এ বছর বন্যায় অনেক ধান নষ্ট হয়েছে। ফলে কৃষকদের কাছ থেকে ধান বেশি দামে কিনতে হয়েছে।

খুচরা বিক্রেতা মেসার্স মনির এন্টারপ্রাইজের মইনুল হক বলেন, এক সপ্তাহ আগের চাল এনেছি। প্রতিটি বস্তায় (৫০ কেজি) ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। চালের দাম বাড়ানো কিংবা শুল্ক বাড়ানোর কোনো হুজুগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই দাম বাড়ে। আর শুল্ক কিংবা দাম কমানোর নির্দেশনার পর আমাদের সেই মাল আসতে আসতে এক থেকে দুই সপ্তাহ কিংবা এক মাসও পার হয়ে যায়। তারপর সাধারণ মানুষ পায়। সুতরাং চালের দাম কমতে সময় লাগবে।

উত্তর বাড্ডার মেসার্স আনোয়ার স্টোরের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আগের দামেই মিল থেকে গতকালকেও চাল এসেছে। চালের দাম এখনো বাড়তি। কমার কোনো খবর আমাদের কাছে নেই।

তিনি বলেন, আমদানি চাল বাজারে আসতে এক থেকে দেড় সপ্তাহ লাগবে। দাম কমলেও এক দুই টাকা কমতে পারে। তার চেয়ে বেশি কমবে না।

মহাখালীর ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের রাইসুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দাম বাড়ার সময় দ্রুত বাড়ে। আর কমার সময় আস্তে আস্তে কমে।

মহাখালী কঁচাবাজারে চাল কিনতে আসা রোপল চক্রবর্তী বলেন, চালের দাম আগুন। ৬০ টাকা কেজির নিচে কোনো চাল নেই। ৫২ টাকার ২৮ চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। পাইজাম চাল কিনেছি ৬০ টাকা কেজিতে। এই চালের ভাত গলার ভেতরে যায় না। তারপরও কিনতে বাধ্য হয়েছি।

উল্লেখ্য, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত রোববার আমদানি শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি রেগুলেটরি ডিউটি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এর আগে গত ২৪ জুন চালের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। এখন আরো ৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হলো।

নতুন আদেশ অনুযায়ী চাল আমদানিতে এখন রেগুলেটরি ডিউটি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ, আগাম আয়কর ৫ শতাংশ এবং অগ্রিম কর ৫ শতাংশসহ মোট ১৫.২৫ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হবে। এই আদেশ অটোমেটেড চাল ছাড়া সব ধরনের চাল আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!