• ঢাকা
  • শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সংঘর্ষের পর রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক বিএনপির


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ০৩:২৬ পিএম
সংঘর্ষের পর রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক বিএনপির

ঢাকা : কাকরাইল মোড়ে সংঘর্ষের কারণে নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে দলটি।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সমাবেশস্থল থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে শনিবার সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন নয়া পল্টনে। বেলা ১১টার পর জাসাসের কর্মীরা সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। পরে নির্ধারিত সময়ের আগেই বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিকে কাকরাইলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এরপর দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে শান্তিনগর ও কাকরাইল মোড়ে অবস্থান করছিলেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। সেসময় সড়কে পিকআপ ভ্যানে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা পিকআপ ঘিরে ফেললে লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এরপর উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে কিছুক্ষণ। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।

দুপুরে পুরো কাকরাইল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রধান বিচারপতির বাস ভবন থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় এলাকা পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

কাকরাইল চার্চের সামনে একটি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি কর্মীরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশসহ কয়েক ডজন আহত হন।

দুপুর ২টা ২৫ মিনিটের দিকে কাকরাইল এলাকায় সাতটি পিকআপে করে বিজিবি সদস্যদের নামতে দেখা যায়। সেখান থেকে হেঁটে নয়াপল্টনের দিকে যান তারা। ওই সময় নয়াপল্টনের দিক থেকে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়।

বিএনপির সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুর নবী খান সোহেলের বক্তব্য দেওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ের কাছে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার সেল নিক্ষেপের শব্দ শোনা যাচ্ছিল সভা মঞ্চ থেকে। এতে বিএনপি মঞ্চের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে যান, স্লোগান দিতে থাকেন।

বেলা আড়াইটার দিকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, সে সময় পুলিশের একটি দল সাঁজোয়া যানসহ এগিয়ে আসতে থাকে নয়া পল্টনের দিকে। সেখানে টিয়ার শেল ছোড়া হয়।

আমির খসরুর বক্তব্যের পরপরই সভা মঞ্চের মাইক বন্ধ হয়ে যায় এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা বসে পড়েন।

১০ মিনিটের ব্যবধানে টিয়ার গ্যাস ও সাইন্ড গ্রেনেডের তোপের মুখে পুরো এলাকা নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়ে। বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নেমে যান মঞ্চ থেকে। তখনই রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপি নেতারা মঞ্চ ত্যাগ করার পর সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায় এবং কাকরোইলের মোড় ও নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।

বিকাল ৪টার দিকে নয়া পল্টনের বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন বিএনপি কর্মীরা। কাঁদুনে গ্যাস থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের আগুন জ্বালাতে দেখা যায়।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!