• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

নেটওয়ার্ক বিপর্যয়

অপারেটরদের একাধিক ব্যাকআপ রাখা দরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩, ০১:২১ পিএম
অপারেটরদের একাধিক ব্যাকআপ রাখা দরকার

ঢাকা : দেশে বর্তমানে সচল রয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৮ লাখ মোবাইল সিম। এর ৭ কোটি ৯৩ লাখ সিমই গ্রামীণফোনের; অর্থাৎ মোবাইল ব্যবহারকারীদের ৪২ শতাংশই গ্রামীণফোনের গ্রাহক। গত বৃহস্পতিবার প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে বিপর্যয় ঘটেছিল। এতে বিভিন্ন স্থানে বন্ধ ছিল কল করা বা কল আসা। ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ ছিল। কোটি কোটি গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। মোবাইল সিমের সঙ্গে যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান জড়িত, তারাও বিপাকে পড়েন।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, প্রতিদিন গ্রামীণফোনে প্রায় ৯০ কোটি কল আসা-যাওয়া করে। প্রতি ঘণ্টায় কল আসা-যাওয়ার পরিমাণ ৩ কোটি ৭৫ লাখ। সোয়া দুই ঘণ্টায় প্রায় ৮ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার কল আসা-যাওয়ার কথা।

যেহেতু কোথাও সোয়া দুই ঘণ্টার আগেই নেটওয়ার্ক ফিরেছে, তাই বৃহস্পতিবার ওই সময়ে কমপক্ষে ৬ কোটি কল বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে। আর মোবাইল সিমনির্ভর আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কত টাকার লেনদেন বাধাগ্রস্ত হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে জানা না গেলেও ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মতো হবে।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথমত, যদি টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে ফাইবার কেব্্ল বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে, তাহলে সারা দেশে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় হলো কেন?

দ্বিতীয়ত, গ্রামীণফোন ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ফাইবার কানেকশনের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা দিয়ে থাকে। ধরে নিলাম সাময়িক সময়ের জন্য ফাইবার কানেকশন বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাহলেও তারা মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সার্ভিস দিতে পারত। কিন্তু সেটা হয়নি। কমিশনের উচিত হবে, একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত কারণ জানা। তাহলে ভবিষ্যতে গ্রাহকরা এমন ভোগান্তিতে পড়বেন না।’

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। বিভ্রাটের এই সময়টায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীরা মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাননি। ইন্টারনেট সেবাও পাওয়া যাচ্ছিল না। জরুরি যোগাযোগ করতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। অনেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অনেকের ব্যবসায়িক যোগাযোগ বা পেশাগত দায়িত্ব পালনও বাধাগ্রস্ত হয়।

জানতে চাইলে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘সরাসরি মোবাইল সিমের পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমেও আমাদের লেনদেন করা যায়। যখন গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না, তখন ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে আমাদের অ্যাপ চলেছে। তবে দুই ঘণ্টার বেশি দেশের কোথাও কোথাও নেটওয়ার্ক না থাকায় মোবাইল অপারেটর কোম্পানি যেভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরাও সেভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।’

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নয়নকাজের জন্য আমাদের দেশের রাস্তাঘাট প্রায়ই খোঁড়া হয়। গত বৃহস্পতিবারের মতো ভবিষ্যতেও ফাইবার কাটা পড়ার আশঙ্কা আছে। এখন মানুষ মোবাইল ফোন কল ও ইন্টারনেটের ওপর অনেক নির্ভরশীল। উন্নয়নকাজের সময় মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সঠিক সমন্বয় করে নেওয়া দরকার। মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোরও একাধিক ব্যাকআপ রাখা উচিত। ব্যাকআপেরও বিকল্প থাকা উচিত। ভবিষ্যতের জন্য আরও সতর্ক হতে হবে।

গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশার বলেন, ‘একসঙ্গে একই ব্যাকবোনের তিনটা ফাইবার কাটা পড়েছিল। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি, যত দ্রুত সম্ভব রিকভার করতে এবং আমরা সেটা পেরেছি। ছোটখাটো ফাইবার কাটা পড়ার ঘটনা নিয়তই ঘটছে। সমস্যা ছোট হওয়ায়, তা কেউ টের পায় না। বৃহস্পতিবারের ঘটনাটা বড় ছিল। তাই কিছু সময়ের জন্য নেটওয়ার্ক বিভ্রাট হয়েছিল। গ্রামীণফোন সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ‘ভিডব্লিউডিএম’ ব্যবহার করে। আগামীতে আমাদের সেবার মান ও প্রযুক্তি কীভাবে আরও ভালো করা যায়, তার চেষ্টা আমাদের আছে।’

গ্রাহকসংখ্যায় শীর্ষে থাকলেও গ্রামীণফোনের সেবার মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। কলড্রপ, মিউট কল, যথাযথ ইন্টারনেট সেবা না পাওয়া, চমকপ্রদ প্যাকেজ ঘোষণার আড়ালে সঠিক সেবা না পাওয়া প্রভৃতি।

গত বৃহস্পতিবার নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের পর ওই দিনই টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তরফে ব্যাখ্যা চেয়ে জরুরি চিঠি পাঠানো হয়েছিল গ্রামীণফোনের সিইওকে। ইতিমধ্যেই জবাব দিয়েছে গ্রামীণফোন। জবাব পর্যালোচনা করছে বিটিআরসি। সূত্র : দেশ রূপান্তর

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!