• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

কম্পনে সেই ‘লক’ খুলে গেছে,  ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের সামনে দেশ’


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২১, ২০২৫, ১০:২১ পিএম
কম্পনে সেই ‘লক’ খুলে গেছে,  ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের সামনে দেশ’

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎস ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়, যা রাজধানী থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এ ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। রাজধানীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে ভবন দুলে ওঠে, অনেকেই আতঙ্কে ঘর-বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন।

প্লেট মুভমেন্টে আটকে থাকা চাপ মুক্ত—বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার জানান, বাংলাদেশের পূর্ব দিকের বার্মা প্লেট এবং পশ্চিমের ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘদিন ধরে চাপ জমে ছিল। সেই আটকে থাকা অংশটি আজকের ভূমিকম্পে নড়েচড়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, এই লকড অংশটা খুলে যাওয়ার অর্থ, সামনে আরও বড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকেই আমরা সতর্ক করছি যে, এ অঞ্চলে প্রায় ৮ মাত্রাশক্তির চাপ জমে আছে। আজকের কম্পন সেই শক্তির ক্ষুদ্র অংশের মুক্তি।

ঢাকায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির জানান, সাম্প্রতিক কয়েক দশকে ঢাকায় অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে এই কম্পনই সবচেয়ে শক্তিশালী। দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলেও ৪ থেকে ৫ মাত্রার কম্পন রেকর্ড হয়েছে, যদিও সেগুলোর উৎপত্তিস্থল দেশের বাইরে।

তিনি বলেন, এ অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই বড় ধরনের ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে, তবে সুনির্দিষ্ট সময় বলা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের ভূগঠন—নরম মাটিতে বাড়তি ঝুঁকি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসাইন ভূইয়া জানান, বাংলাদেশের অবস্থান তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেট—ইন্ডিয়ান, বার্মিজ এবং ইউরেশিয়ান—এর সংযোগস্থলের খুব কাছে হওয়ায় ভূমিকম্প হওয়া এখানে স্বাভাবিক ঘটনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটি তুলনামূলক নরম হওয়ায় নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সি ও উচ্চ অ্যাম্পলিচিউডের কম্পনে ক্ষতির ঝুঁকি বেশি। মাটির নিজস্ব কম্পাঙ্ক আর ভবনের কম্পাঙ্ক এক হলে তা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন বিশ্বে প্রায় ৫০টি ছোট মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে—এর মধ্যে ১ থেকে ৩ মাত্রার বেশির ভাগ কম্পন টের পাওয়া যায় না, কিন্তু ৪ মাত্রার ওপরে গেলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

এম

Wordbridge School
Link copied!