• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে কী লিখেছে বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৩:৫৬ পিএম
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে কী লিখেছে বিএনপি

ঢাকা: সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির ডকুমেন্ট চেয়ে চিঠি দিতে বিএনপির দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছেন। এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব  সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন।

রোরবার (১৭ নভেম্বেব) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান এই দুই নেতা। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির ডকুমেন্ট চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয়া হচ্ছে। বিএনপির দুই নেতা ওই চিঠি নিয়ে গেছেন।

এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষরিত চিঠিটি গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী প্রাইভেট সেক্রেটারি-২। প্রধানমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশ গেছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে যা লেখা হয়েছে তা সোনালীনিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সৌজন্যে আমরা জানতে পেরেছি যে আপনি সর্বশেষ ভারত সফরকালে ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ভারতের সাথে ৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছেন।

এছাড়া একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি রপ্তানি বিষয়সহ ৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে মর্মে প্রকাশ। প্রকৃতপক্ষে এ সফরের সময় ভারতের সাথে সর্বমোট কয়টি চুক্তি/সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে সে সম্পর্কে জনগণ অবহিত নয়।

ইতিমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এসকল চুক্তিকে জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী তথা বাংলাদেশবিরোধী চুক্তি হিসেবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার। অপরদিকে স্বাক্ষরিত এসকল চুক্তিকে জাতীয় স্বার্থবিরোধী মর্মে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীর পানি সংক্রান্ত চুক্তি ঝুলিয়ে রেখেছে। অথচ ফেনী নদী থেকে ভারতকে পানি উত্তোলনের চুক্তি, বাংলাদেশের উপকূলে ভারতের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে সহযোগিতা বিনিময়ের নামে ভারতকে আমাদের উপকূলে রাডার স্থাপনে চুক্তি এবং মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের মতো স্পর্শকাতর জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট চুক্তি সই করার পূর্বে বিষয়টি নিয়ে কখনো কোনো ধরনের পাবলিক ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়নি কিংবা বাংলাদেশের জনগণের মতামত গ্রহণ করা হয়নি।

বাংলাদেশের সংবিধানের আর্টিকেল ১৪৫ (ক) তে উল্লেখ আছে যে, বিদেশের সঙ্গে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি তা সংসদে পেশ করার ব্যবস্থা করবেন। তবে শর্ত হচ্ছে যে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোনো চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হবে।

কিন্তু ভারতের সাথে যেসকল চুক্তি সই করা হলো তার কোনোটিই জনসম্মুখে কিংবা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়নি। এর ফলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণই এসকল চুক্তির খুঁটিনাটি এবং বিস্তারিত বিবরণ সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে। অথচ এসকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির বিষয়ে অবহিত থাকা জনগণের মৌলিক অধিকার, যে অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত রাখা স্পষ্টতঃই সংবিধানের লঙ্ঘন।

প্রকৃতপক্ষে ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সম্পাদিত চুক্তিগুলো সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা হয়নি।

এমতাবস্থায় সংবিধানের ১৪৫(ক) অনুযায়ী ভারতসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে স্বাক্ষরিত সব চুক্তির পূর্ণবিবরণী অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদ ও জনসম্মুখে প্রকাশ করে জনমনে সৃ্ষ্ট নানাবিধ প্রশ্ন ও সন্দেহ দূর করার আহবান জানাচ্ছি।’

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!