• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিলের ৪৫ দিনে সমান সুযোগ নিশ্চিত সম্ভব নয়


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২২, ২০১৭, ০৪:০২ পিএম
তফসিলের ৪৫ দিনে সমান সুযোগ নিশ্চিত সম্ভব নয়

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মধ্যস্থতা বা তফসিলের আগে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা ইসির দায়িত্ব নয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, প্রয়োজন মনে করলে সঠিক নির্বাচনের স্বার্থে ইসি তার বাইরেও কাজ করতে পারে। এক দল ভোট চাইছে। আরেক দল শৃঙ্খলিত হয়ে আছে। তফসিলের ৪৫ দিনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার কথা অবাস্তব। এখন থেকে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে করণীয়’ শীর্ষক ওই আলোচনা হয়।

সভায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাত্ত্বিক দিক থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশের কমিশনের চেয়ে শক্তিশালী ও বড়। কিন্তু সরকার শতভাগ সহায়তা করলেও কী ভালো নির্বাচন সম্ভব? দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু এর অন্তরায় হচ্ছে, রাজনৈতিক সংস্কৃতি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ঠিক করতে হবে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় কি না। আবার ইসির ওপর সবার আস্থা না থাকলেও তাদের পক্ষে নির্বাচন করা কঠিন।

সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আদালতেরও ভূমিকা আছে। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী বিচার বিভাগের কারণে। 

মূল প্রবন্ধে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান সংবিধানে জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যেই পরবর্তী মেয়াদের জন্য নির্বাচন করতে হবে। আর সেটা বর্তমান সংসদ বহাল রেখেই করতে হবে। এই বিধান বহাল রেখে নির্বাচন হলে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে সুদূরপরাহত। এভাবে নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীনেরা বিশেষ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। 

তিনি বলেন, অতীতে দলীয় সরকারের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলোতেই ক্ষমতাসীনেরা জয়ী হয়েছে। সম্প্রতি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে দলীয়করণ আরও চরম আকার ধারণ করেছে। তাই বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের পথে অন্তর্নিহিত বাধা।

ইসির সংলাপের বিষয়ে গবেষক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ইসি যদি শুধু আওয়ামী লীগকে ডেকে আলোচনা করত, তারা কী রকম নির্বাচন চায়, কী রকম সহায়তা করবে, সেটা জানত, তাহলে ভালো হতো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনঘন বসলে ভালো। কারণ, সব দল যদি বলে, তারা সুইজারল্যান্ডের মতো নির্বাচন চায়, কিন্তু আওয়ামী লীগ না চাইলে তা হবে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন, তাহলে শুধু শুধু মতবিনিময়ে সময় নষ্ট করে কী লাভ?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে কী অবস্থা হয়, তা গত চার বছরে দেখা গেছে। সরকার সব সময় নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে ভীতির মুখে থাকে। এ কারণে ইমরান এইচ সরকার বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করতে গেলে হামলা হয়। বিএনপি সভা করতে গেলে বাধা আসে। প্রধান বিচারপতি কী বলেছেন, তা নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!