• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
১০৬তম জন্মদিন উদযাপন

প্রীতিলতাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতাই অর্থহীন


সাহিত্য-সাংস্কৃতি প্রতিবেদক মে ৮, ২০১৭, ০১:০১ এএম
প্রীতিলতাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতাই অর্থহীন

ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে প্রীতিলতাও একটি স্মরণীয় নাম। দেশ স্বাধীনের মূল ভিত্তি দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছেন প্রীতিলতারাই। তাদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা হয়ে পড়ে অর্থহীন। বৃটিশবিরোধী সংগ্রামের প্রথম নারী আত্মদানকারী বিপ্লবী প্রীতিলতার ১০৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন বক্তারা।

বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, প্রীতিলতা ইতিহাসের মূল্যায়নের একটি মহৎ অংশ। মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার সঙ্গে যখনি আমরা নিজেদের সম্পৃক্ত করি, তখনি প্রীতিলতার কথা সামনে আসে। দেশ স্বাধীনের মূল ভিত্তি দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছেন প্রীতিলতারা। প্রীতিলতারা জীবন দিয়ে আমাদের একটি উচ্চ আদর্শ দিয়ে গেছেন। বর্তমানে আমরা সেই আদর্শের জায়গায় আছি কিনা তা ভাবার সময় এসেছে।

এই মানবাধিকার নেত্রী আরো বলেন, যে বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, কোথায় আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন, কোথায় বীরত্বতা, সব কিছু আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। কেন যেন আজ আমরা সব ভুলে যেতে বসেছি।

নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, অসীম সাহসী প্রীতিলতা যদি হাতে অস্ত্র তুলে না নিতেন, তাহলে এই স্বাধীন দেশে বাস করা সম্ভব হতো না। বিপ্লবী এই নারীর কাছ থেকে আমাদের শক্তি, সাহস আর আদর্শকে নিজেদের মধ্যে ধারন করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রীতিলতার জীবনী এবং তার শেষ বিবৃতি পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভূক্ত করার জোর দাবি জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক গীতি আরা নাসরিন বলেন, প্রীতিলতার জন্মদিনে অনেক বেশি সাহসী হয়ে উঠছি ছোটদের উদ্বুদ্ধ হতে দেখে। প্রীতিলতাকে সমাজের রোল মডেল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ রোল মডেলদের আমাদের সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। যে সময়ে নারীদের বিপ্লবী হওয়া সহজ ছিল না; সেই সময়ে প্রীতিলতা শুধু বিপ্লবীর ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হননি, বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র নেতৃত্ব দিয়ে জীবনও উৎসর্গ করেছেন।

ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চু বলেন, প্রীতিলতা আমার উৎস। আজকে এ অনুষ্ঠানে প্রীতিলতার কথা শুনে আমার রক্তে আগুন ধরে যাচ্ছে। যে সময়ে আমরা (নারীরা) বাড়ি থেকে বের হতে পারতাম না। এ রকম পরিস্থিতিতে প্রীতিলতাদের মতো নারী বিপ্লবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন সশস্ত্র আন্দোলনের। এ ভাষা সৈনিক বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে কী পেয়েছি? আজ গণতন্ত্র হারাচ্ছি। মানবতা হারাচ্ছি। সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। প্রীতিলতাদের মতো আবার গর্জে উঠতে হবে।

খেলাঘরের সংগীত পরিবেশনা

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যমল দত্ত বলেন, প্রীতিলতা আজকের বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমানে মনে হচ্ছে, প্রীতিলতাদের  আত্মত্যাগ বৃথা। কারণ আজকের বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্থানের জন্য প্রীতিলতারা জীবন দেননি। তারা একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ উপহার দেয়ার জন্যই জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।

প্রীতিলতা ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক পঙ্কজ চক্রবর্তী প্রীতিলতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, বীর কন্যা প্রীতিলতার যে আত্মত্যাগ তা আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকি। এবারও প্রীতিলতাকে নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মাণ হচ্ছে।

শনিবার (৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিপ্লবী মহিয়সী নারী প্রীতিলতার ১০৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। যৌথভাবে ভোরের কাগজ এবং প্রীতিলতা ট্রাস্ট এর আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজের জেষ্ঠ প্রতিবেদক শরীফা বুলবুল।

অনুষ্ঠানে খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাবুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে ছোট ভাই বোনদের সংগীত পরিবেশনা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!