• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আ.লীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত!


ঝালকাঠি প্রতিনিধি মার্চ ২৭, ২০১৭, ০৬:০৬ পিএম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আ.লীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত!

আ.লীগ নেতা হুমায়ুন কবিরের বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুরে অনুমতি না নিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান করার অপরাধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার (২৬ মার্চ) বিকেলে উপজেলার এম.এম. মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সেখানে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর ও গালাগাল করে।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ওই আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকন জানায়, রোববার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এম.এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। তবে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এম.এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য হুমায়ুন কবিরের অনুমতি না নেয়ায় সে ক্ষুদ্ধ হয়।

তিনি আরো বলেন, ওইদিন বিকেলে বিদ্যালয় চত্বরে ক্ষিপ্ত আ.লীগ নেতা হুমায়ুন দলবল নিয়ে অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রবেশ করে উপস্থিত অতিথি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে তাকে মারধর করে।

সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুস সোবাহান খান জানান, হামলাকারী হুমায়ুন কবির একজন নব্য আওয়ামী লীগার ও তার বাবা আব্দুস সাত্তার একজন তালিকা ভুক্ত রাজাকার। দল ক্ষমতায় আসার পর সুযোগ বুঝে হুমায়ুন আ.লীগে যোগদান করে সাতুরিয়া ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেয়।

দলকে পুঁজিকরে বিতর্কিত এ ব্যক্তি এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অপরাধে হুমায়ুন কবিরের কঠোর বিচারের দাবি জানান।

অন্যদিকে এঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পাঠদান বর্জন করে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহা-সড়ক অবরোধ করে রাখে। প্রায় দু’ঘন্টা  অবরোধের ফলে সড়কে কয়েক মাইল জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে রাজাপুর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই ঘটনার কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিদ্যালয়ের দ্বশম শ্রেনীর কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের সামনে প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে। হুমায়ুন কবিরের বিচার যতক্ষণ না পাব ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমান ওবায়েদ বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। দোষী ব্যক্তির অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এলাকাবাসী জানায়, বিদ্যালয় চত্বরে যুবলীগকে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়ার কারণে প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের সামনেই অর্তকিত হুমায়ুন কবির ও তার দলবল এ ঘটনা ঘটায়। স্থানীয় যুবলীগের সঙ্গে হুমায়ুন কবিরের দলীয় বিরোধের কারণে এঘটনা ঘটেছে বলেও জানায় এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে হামলাকারী হুমায়ুন কবীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়েছে, তবে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের বাহিরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!