• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামী-সন্তানকে শেষ বারের মত দেখতে শ্রীপুরে এ্যানি


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৯, ২০১৮, ০৭:১৭ পিএম
স্বামী-সন্তানকে শেষ বারের মত দেখতে শ্রীপুরে এ্যানি

ঢাকা: তিনি জানতেনই না তার পাশের পড়ে থাকা প্রিয়ক ও একমাত্র নাড়ি ছেঁড়া ধন চনমনে শিশু প্রিয়ন্তী মারা গেছে। নেপালের কাঠমান্ডুতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আলিমুন্নাহার এ্যানি পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে এই বড় আঘাতের কথা না জানানো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডাক্তাররা। 

কিন্তু, সন্তান আর স্বামীর অপেক্ষায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন এ্যানি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বারবার স্বামী সন্তানের জন্য আর্তনাদ করছিলেন তিনি। কিন্তু পাশেই চিকিৎসাধীন এ্যানির দেবর আহত মেহেদীই এ্যানিকে জানিয়েছেন যে, তার প্রিয়তম স্বামী ও আদরের ছোট্ট সন্তান  প্রিয়ন্তী তামাররা এ পৃথিবীতে আর নেই।

আর কী কোনো মা বা স্বামীকে আটকে রাখা যায়? তাইতো ডাক্তাররা এ্যানিকে তার স্বামীর বাড়ি শ্রীপুরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেহেদীর বাবা তোফাজ্জল হোসেন।

কিন্তু আজ তিনি এ খবর জেনে গেছেন। জেনে গেছেন প্রিয়তম স্বামী বেঁচে না থাকার খবর। সন্তানের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন সেই এ্যানি। জেনে গেছেন তার প্রিয় সন্তানটিও যে আর নেই। সন্তান আর স্বামীর অপেক্ষায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন এ্যানি। সেই প্রিয় দুটি হাসিমাখা মুখ আর দেখা হবে না। এ খবর শুনে বেঁচে থেকেও যেন মৃত্যুর স্বাদ আচ্ছাদন করছেন এ্যানি।

পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যুর খবরটি জানাতে চায়নি। কিন্তু পাশেই চিকিৎসাধীন এ্যানির দেবর আহত মেহেদীই এ্যানিকে জানিয়েছেন যে, তার প্রিয়তম স্বামী ও আদরের ছোট্ট সন্তান তামাররা এ পৃথিবীতে আর নেই।

মেহেদী এ্যানির সম্পর্কে তার স্বামীর ছোট ভাই। মেহেদী ও স্বর্ণা তারা স্বামী স্ত্রী। তারা তিনজনই ঢামেকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

মেহেদীর কাছ থেকে এ খবর শুনে হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বারবার স্বামী সন্তানকে শেষ বারের মতো দেখতে আর্তনাদ করছিলেন এ্যানি। তাই চিকিৎসকরা এ্যানিকে তার স্বামীর বাড়ি শ্রীপুরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেহেদীর বাবা তোফাজ্জল হোসেন।

গত সোমবার ইউএস-বাংলার বিএস-২১১ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ৪৯ জন। ওই উহোজাহাজে আলামুন নাহার অ্যানি তার স্বামী ফারুক হোসেন প্রিয়ক, মেয়ে তামারা প্রিয়ন্ময়ী, দেবর মেহেদি হাসান, জা সৈয়দ কামরুন্নাহার স্বর্ণা ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহত হন, প্রিয়ক ও তার মেয়ে প্রিয়ন্ময়ী। আহত হন বাকিরা। নেপালে চিকিৎসার পর দেশে এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা।

‘কিছুক্ষণ আগে এ্যানিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনায় শ্রীপুরে স্বামীর বাড়িতে নেয়া হচ্ছে। চিকিৎসাধীন মেহেদীও রিলিজ নিয়ে প্রিয়কের জানাজায় অংশ নিতে রওনা দিয়েছেন’ যোগ করেন তোফাজ্জল হোসেন।

ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, এ্যানিকে পুরোপুরি রিলিজ দেয়া হয়নি। তাদের প্রিয়জনকে শেষ বারের মতো দেখতে অনুরোধের ভিত্তিতে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে তারা চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!