• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
মধ্যভাগে জমেছে বাণিজ্য মেলা

বেড়েছে বিক্রি, ছাড়ের ছড়াছড়ি


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৪, ২০২০, ০৪:১৫ পিএম
বেড়েছে বিক্রি, ছাড়ের ছড়াছড়ি

ঢাকা : মধ্যভাগে এসে জমে উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২৫তম আসর। ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা এখন চোখে পড়ার মতো। ফলে গেল সপ্তাহের তুলনায় বিক্রিও বেশ বেড়েছে। আয়োজকরা বলছেন, এখন দিন যত গড়াবে ক্রেতা-দর্শনাথীর সংখ্যা ততই বাড়বে।

ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মেলায় চলছে ছাড়ের ছড়াছড়ি। অধিকাংশ পণ্যে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে পোশাক, আসবাব ও গৃহস্থালি পণ্য, শিশুদের খেলনা, নারীদের গহনা, ইলেকট্রনিকস পণ্য, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমারসহ খাবারে বেশি ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল মেলায় দেখা গেছে, দেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন তাদের ফোন ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। আবার সব পণ্যেই ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে মার্সেলও। শুধু ওয়ালটন নয়, ইলেকট্রনিকস পণ্যের দেশি বিদেশি সব ব্র্যান্ডই ছাড় ও অফারে ভরপুর।

পিছিয়ে নেই প্লাস্টিক পণ্যও। মেলায় বেঙ্গল প্লাস্টিকের স্টলে তাদের যেকোনো পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। আরএফএল পারটেক্সও পিছিয়ে নেই। সবমিলে প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড় দেওয়া হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি এক সঙ্গে ন্যূনতম দুই হাজার টাকার পণ্য কিনলে মোট মূল্যের শতকরা ১০ শতাংশ কম নিচ্ছে। প্লাস্টিক পণ্যের মূল্য ১০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা বা বেশি।

বড় ছাড় রয়েছে আসবাবে। আখতার ফার্নিচারের কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, তাদের বিভিন্ন পণ্যের ওপর ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য আসবারের স্টলেও চলছে ছাড়। কোথাও কোথাও নির্দিষ্ট ফার্নিচারের ওপরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।

সবচেয়ে লোভনীয় ছাড়ের ছড়াছড়ি গৃহস্থালি পণ্যে। কোথাও একটি পণ্য কিনলে ২০টি ফ্রি’র ব্যানার, কোথাও কোথাও ৫০ শতাংশের অফার। এর মধ্যে খুচরা স্টলগুলোর মধ্যে মিয়াকু তাদের স্টলে ১০টি ফ্রি অফার দিয়েছে। ২১ হাজার ৫০০ টাকার ওভেন কিনলে টিভি, হটপট, রুটি মেকারসহ ১০টি পণ্য ফ্রি দিচ্ছে তারা।

শিশুদের খেলনার দোকানগুলোতে চলছে ১০-২০ শতাংশ ছাড়। পোশাকের মধ্যে নারীদের থ্রিপিসের অফার রয়েছে বরাবরের মতো আকর্ষণীয়। পোশাক খাতের প্রতিটি স্টলে ১টি কিনলে তার সাথে ১টি কিংবা ২টি কিনলে ১টি থ্রিপিস ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। গহনায়ও রয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। ফলে বেশ শীত উপেক্ষা করেও মেলায় এসেছেন অনেকে। এতে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছিল বেশ ভিড়।

গৃহস্থালি পণ্যের বিক্রেতা লিয়াকত মিয়া বলেন, শুরুর দিকে এবার খুব খারাপ গেছে। গত শনিবারের পর থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের দেখা গেছে। কিছুটা বেচা-বিক্রিও হচ্ছে। আজকে একটা ভালো বিক্রির আশা করছি।

অন্য বিক্রেতারাও কয়েক দিনের কম বিক্রির আক্ষেপ পুষিয়ে নিচ্ছে মেলায়। সকাল ১০টায় মেলার দরজা খোলার পর ১১টার মধ্যেই সরগরম হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। তারপর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।

আবার সীমিত বিনোদনকেন্দ্রের এ শহরে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা হয়ে উঠেছে রাজধানীবাসীর বিনোদনকেন্দ্র। অনেকে সপরিবারে এসেছেন। ঘুরছেন, ছবি তোলায় ব্যস্ত রয়েছেন। এমন একজন দর্শনার্থী ঢাকা কলেজের মিজানুর রহমান বলেন, ঘোরার জন্য সেরা জায়গা এ মেলা। এর মধ্যে অল্প দামে কিছু কেনা গেলে মন্দ হয় না। আমরা (শিক্ষার্থীরা) ছাড়ের জন্য অপেক্ষায় থাকি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বছরের প্রথম দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন। মেলায় প্রবেশে এ বছর প্রাপ্তবয়স্কদের ৩০ টাকার পরিবর্তে টিকিটের মূল্য করা হয়েছে ৪০ টাকা। শিশু ও কিশোরদের জন্য আগের মতো ২০ টাকার টিকিটে মূল্য রয়েছে। টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন অনেক দর্শনার্থী।

গত বছর ডিআইটিএফে স্টলের সংখ্যা ছিল ৬৩০টি। এ বছর সে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮৩টি। যার মধ্যে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬৪টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৩টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৯টি, প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৩টি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, সাধারণ স্টল ১০৭টি, ফুড স্টল ৩৫টি ছাড়াও ২৭ বিদেশি প্যাভিলিয়ন, ১১টি বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং ১৭টি বিদেশি প্রিমিয়াম স্টলসহ আরো কিছু স্টল রয়েছে। স্টলের সংখ্যা কমার বিষয়ে আয়োজকরা দাবি করছেন, মেলাকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য স্টল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশি খোলা জায়গা রাখা আছে। যাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা সুষ্ঠু পরিবেশ পান। আর বিদেশি ক্রেতা আকর্ষণের বিষয়টিও মাথায় ছিল এ বছর।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!