• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
শারদীয় দুর্গাপূজা

প্রতিমায় রঙ-তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি


মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি অক্টোবর ৭, ২০২১, ০৩:৪৬ পিএম
প্রতিমায় রঙ-তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

টাঙ্গাইল : দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভুত হয়। তাই এ ধর্মের মানুষেরা মনে করেন সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার ও গ্লানি দূর করতে এই পূজার আয়োজন। আর এই উৎসবকে ঘিরেই টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের একটি পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষে এখন চলছে প্রতিমায় রঙ ও সাজসজ্জার কাজ। বাহারী রঙের আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রঙে-ঢঙে। আর পূজার সময় ঘনিয়ে আসায় এখন দিন রাত একাকার করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি।

প্রতিমা শিল্পী অসীম রায় বলেন, প্রতিমায় মাটির কাজ শেষে এখন চলছে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ। আর দু’একদিনের মধ্যে রঙের কাজ শেষ হবে। এখন খুব ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটছে।

আরেক কারিগর গোপাল কর্মকার বলেন, আমরা বংশ পরম্পরায় প্রতিমা তৈরি করে আসছি। বছরের ৩-৪ মাস কাজ করে যে টাকা আয় করি সেটি দিয়েই সংসার চালাতে হয়। তবে, যে তুলনায় প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়ছে সে অনুযায়ী আমাদের আয় খুবই কম।

উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, পূজার প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষের দিকে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে এবছর উপজেলায় ২৪৬টি পূজা মন্ডপে উৎসব হবে। যা সারা জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিকে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য উপজেলার পৌরসদরের দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির মন্ডপ, কেন্দ্রীয় কালী মাতার মন্দিরের মন্ডপ, মহেড়া ও জামুর্কীর মন্ডপ। এছাড়া দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে প্রতিবছরের মতো এ বছরও দেশ-বিদেশের কূটনৈতিক, শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের মিলনমেলা হবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

জামুর্কী করনেশন বয়েজ ক্লাব পূজা মন্ডপের সভাপতি প্রফুল্ল রাজবংশী বলেন, গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি থাকায় স্বল্পপরিসরে পূজার আয়োজন করেছিলাম, কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি একটু ভালো হওয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করবো আশা করছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে মন্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করবে।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রমথেশ গোস্বামী শংকর বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক উৎসব উদযাপনের সব প্রস্তুতি নিয়েছে পরিষদ। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা মিটিং, প্রস্তুতিমূলক সভা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আমাদের পূজা উদযাপন করতে সব ধরণের সহযোগিতা করছেন।

মির্জাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, অনুষ্ঠান নির্বিঘœ করতে প্রতিটি মন্ডপে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে, সেই সাথে যেনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সদা প্রস্তুত, মাঠে পুলিশি টহল অব্যাহত আছে এবং প্রতিটি ইউনিয়নে বিট ভাগ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

মির্জাপুর পৌর মেয়র সালমা আক্তার বলেন, পূজার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে এবার ৫২টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা মন্ডপে আসার আহ্বান এবং দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে শান্তিপূর্ণ পূজা অর্চনার লক্ষে প্রতিটি মন্ডপ এলাকায় যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। মাঠে পুলিশ বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার কাজ করছে। আমরাও সার্বক্ষণিক নজরদারি করছি এবং বিজয়া দশমীর দিন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা সবধরণের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি। আশা করছি শান্তিপর্ণভাবে এ উৎসব সম্পন্ন হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!