• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফরিদপুরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতের কুটির শিল্প


ফরিদপুর প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০১:৩৯ পিএম
ফরিদপুরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতের কুটির শিল্প

ফরিদপুর: জেলার গুটি কয়েক পরিবারের কিছু মানুষ আঁকড়ে রেখেছে এই শিল্পকে। এই বাঁশ আর বেতই বর্তমানে তাদের জীবিকার প্রধান বাহক। কিন্তু দিন দিন বাঁশ আর বেতের তৈরি বিভিন্ন পন্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। জীবন জীবিকার তাগিদে তবুও বাপ-দাদার এই পেশাকে এখনও ধরে রেখেছে কিছু সংখ্যক পরিবার। একসময় বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত সবখানেই ব্যবহার করা হতো বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র। এখন সময়ের বিবর্তনে বদলে গেছে চিরচেনা সেই চিত্র। এরপরেও ফরিদপুর জেলার গুটি কয়েক পরিবারের মানুষ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

বর্তমানে স্বল্প দামে হাতের নাগালে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় কুটির শিল্পের চাহিদা আর তেমন নেই। তাছাড়াও দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ ও বেত। এখন আর আগের মতো বাড়ির আশেপাশে বাঁশ ও বেত গাছ রাখছে না কেউ। সেগুলো কেটে বিভিন্ন চাষাবাদসহ দালান তৈরি করছে মানুষ। তাই কাঁচামাল আর আগের মতো সহজেই পাওয়া যায় না।

এখন আর যেখানে সেখানে দেখা মেলে না আর বাঁশ ও বেত ঝাঁড়। তাছাড়াও প্লাস্টিক ও অন্যান্য দ্রব্যের পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ এখন সেগুলোর ওপর।

জানা যায়, এক সময় দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালী ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী। বাড়ির পাশের ঝাঁর থেকে তরতাজা বাঁশ-বেত কেটে তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এসব নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি, বাজারে বিক্রি করে চলতো তাদের জীবন-যাপন।

তবে এখনো গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও বেতের তৈরি খোল, চাটাই, খোলুই, ধামা, টোনা, পালল্টা, মোড়া,দোলনা, বুক সেল্ফ কদাচিৎ চোখে পড়ে।

ফরিদপুর জনতা ব্যাংকের সামনে থেকে কথা হয় খগেন্দ্র চন্দ্র রায়ের সাথে, তিনি বলেন বেত শিল্পের দুর্দিনে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার বেতশিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও পূর্ব পুরুষের হাতেখড়ি এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। প্রতিদিন তাদের তৈরি কিছু জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাজারসহ গ্রাম-গঞ্জে নিয়ে ফেরি করলে কিছু সৌখিন মানুষ আছে তাদের পণ্য কেনেন। বেলা শেষে যা বিক্রি হয় তা দিয়ে খাবার কিনে বাড়ি ফেরেন তারা। এভাবেই তাদের জীবন-জীবিকা চলে। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূলের দাম বেশি হওয়ায়, স্বল্প আয়ের এ পেশায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বোয়ালমারী উপজেলার সোহাগ হল এর সামনে চাটাই ঘড়ের কাজ করার সময় কথা হয় বিন ইয়ামিন এর সাথে তিনি  বলেন, আগের মতো এখন আর হাট-বাজার ও বাড়িতে বাঁশ-বেতের কদর নেই। বর্তমান মিল-কলকারখানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের অনেক পুরনো ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে।

সোনালীনিউজ/এস/এসআই

Wordbridge School
Link copied!