বরগুনা: দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে দেশের ছাত্র জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল। আন্দোলনে বরগুনার ১০ জন মানুষ শহীদ হয়েছে। জাতীয় বীর তারা। তাদের কারণে আমরা নতুন স্বাধীনতা ও মুক্তি লাভ করেছি। আমরা সকল শহীদদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। যারা আহত হয়েছে, যাদের গায়ে এখনো বুলেট রয়েছে যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের কারণে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
প্রিয় বরগুনাবাসী আমরা জানি উপকূলে আপনাদের অনেক লড়াই সংগ্রাম করে বাঁচতে হয়। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে বরগুনায় আমাদের ঘাঁটি তৈরি করতে হবে। আমরা চাই এই বরগুনার নদী সমূদ্রের রক্ষা হবে। উপকূল সুরক্ষা হবে, মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত হবে। বরগুনাবাসীর দিকে কেউ তাকায় না। উন্নয়নের মূলা ঝুলালেও বরগুনা পর্যন্ত আসে না।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে এনসিপির দেশ গড়তে তাদের চলমান পথযাত্রায় এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ আরো বলেন, কতটুকু আছে তা বরগুনাবাসী আপনারাও জানেন। প্রিয় বরগুনাবাসী আমরা জানি জলবায়ু দুর্যোগ সমস্যা রয়েছে, কৃষিতে লবনাক্ততা সৃষ্টি করছে, সুপেয় পানির সমস্যা রয়েছে। আগামীর বাংলাদেশে বঙ্গোপসাগর হচ্ছে উন্নয়ন ও সম্ভাবনার জায়গা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে চাঁদাবাজ আর দুর্নীতি আবারো চেপে বসেছে দেশে। আমরা বলেছিলাম এই চাঁদাবাজ আর মাফিয়াদের যে সিস্টেম বাঁচিয়ে রাখে সেই সিস্টেমের আমরা পতন চাই। কিন্তু দেখেছি সেই সিস্টেমকে টিকিয়ে রেখেছে একটি দল। চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে একটি দল।
পুরান ঢাকায় পুরান ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, বরগুনা এলাকার সন্তান সোহাগকে বিভৎস্য ভাবে পাথর দিয়ে কিভাবে জনসম্মুখে হত্যা করা হয়েছে। বরগুনা বাসী কি এই পাথর মেরে হত্যার রাজনীতি দেখতে চায়? বরগুনাবাসী কি এই চাঁদাবাজীর রাজনীতি দেখতে চায়? এসময় তিনি আরো বলেন, আপনাদের সন্তানকে ঢাকা শহরে যে ভাবে হত্যা করা হয়েছে আপনারা প্রতিবাদ তৈরী করুন। কিভাবে গণঅভ্যুত্থানের হাজারো মানুষের রক্তের পরেও এই সরকারের আইনশৃংখলার ব্যার্থতা এবং একটা রাজনৈতিক দলের চাদাবাজদেরকে সমর্থন দেওয়ার পর আপনাদের সন্তানকে কিভাবে পাথর মেরে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গণহত্যার বিচার আর নতুন বাংলাদেশের জন্য আমরা সংস্কার চাই। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে দুদক পর্যন্ত নিরপেক্ষ ভাবে নিয়োগ হবে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। আমরা কোন স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে ফেরত আসতে দিবো না। আমরা বাংলাদেশ পন্থী রাজনীতি করবো। আমরা বাংলাদেশে ভারত পন্থী কিংবা পাকিস্তান পন্থি রাজনীতির কোন জায়গা হবে না। এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি একটা দল ইতিহাসে এককালে পাকিস্তান পন্থিদের পুনর্বাসন করেছিলো। গনঅদ্ভুত্থানের পরে তারা আবার মুজিববাদীদের পুনর্বাসিত করছে। আমি স্পস্টভাষায় বলছি বাংলাদেশে মুজিববাদিদের রাজনীতি হবে না, চাঁদাবাজদের রাজনীতি হবে না।
বরগুনায় এনসিপি আয়োজিত পদযাত্রায় দলটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মূখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের বাঁধাদেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমাদের এই পথকে রুদ্ধ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমি স্পস্টভাবে বলছি বাঁধা দিলে বাঁধবে লড়াই, সেই লড়াইয়ে আমরাই জিতবো। তরুন প্রজন্ম দ্বীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। চাঁদাবাজরা ষরযন্ত্র শুরু করেছে তাদের বিরুদ্ধে দ্বীর্ঘ লড়াইয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
বরগুনায় প্রথম বারের মতো কোনো সভায় এ এলাকার জামাতা হিসাবে পরিচিত এনসিপির উত্তর অঞ্চলীয় মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম যোগদান করায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাকে স্লোগানের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানান।
পথসভায় সারজিস আলম বলেন, আমরা জানতাম হাসিনা নাকি দক্ষিণাঞ্চলকে উন্নয়নের জোয়াড়ে ভাসিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আজ আমরা বরগুনায় এসে দেখি এখানের রাস্তাঘাট গর্ত আর পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, অদ্ভ্যুত্থান চলায় সময় এই সদর থানার ওসি সামনে থেকে আমাদের সহযোদ্ধাদের লাঠি চার্জ করেছে। বরগুনার পুলিশ ভাইরা যারা রয়েছেন তারা জনগনের পুলিশ হয়ে উঠুন। যদি কোন দলের পুলিশ হয়ে উঠুন তাহলে আগামীর বাংলাদেশে আর জায়গা হবে না। ২৪-এ পার পেয়েছেন পরের বার জান নিয়েও পালাতে পারবেন না।
বরগুনা এনসিপি আয়োজিত পদযাত্রায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব জাফরিন জারা, শামান্তা শারমীন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক তালাত মোহামুদ রাফি।
এআর







































