• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

৩৪ মাস পর ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে সূচক, আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৩, ২০২৪, ১২:২৮ পিএম
৩৪ মাস পর ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে সূচক, আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা

ঢাকা : দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও ভয় ও আতঙ্ক কাজ করছে৷ এর অন্যতম কারণ দীর্ঘ ৩৪ মাসে নানান জটিলতার পরও আবার নতুন করে মূল্যসূচক ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। যার ককরণে এই ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ডিএসইএক্স বুধবার (১৩ মার্চ) বেলা ১১ টা পর্যন্ত ৩০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯৭৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এটি গত ৩৪ মাসের মধ্যে ডিএসইএক্স সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৮ জুলাই এ সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমেছিল। আর তাই সূচকের পতন ঠেকাতে তিন দিন পর ৩১ জুলাই থেকে শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর তথা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরআগে ডিএসইএক্স গতকাল মঙ্গলবার ৫২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে। পরপর দুই দিনের বড় অংকে সুচক পতনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আবারও বড় পতনের সামনে পড়তে যাচ্ছে কিনা দেশের শেয়ারবাজার সে আশঙ্কায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যেটির কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার বা ইউনিট বেঁধে দেওয়া দামের নিচে নামতে পারে না। ২০২২ সালে এ ব্যবস্থা আরোপের ফলে শেয়ারবাজারে স্থবিরতা নেমে আসতে শুরু করে এবং লেনদেন কমে যায়। একপর্যায়ে অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমে ফ্লোর প্রাইসে আটকে যায়। এসব কোম্পানির লেনদেন একপ্রকার বন্ধই হয়ে পড়ে। এতে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার দাবি ওঠে। এ অবস্থায় বাজারে গতি ফেরাতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি।

ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর তুলে নেওয়ার পর সার্বিক লেনদেন বৃদ্ধি পায় এবং সূচকের ওঠানামা দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক কমে আবারও ছয় হাজারের কাছাকাছি নেমে আসে। শেয়ারবাজারে সূচকের ছয় হাজার পয়েন্ট গত কয়েক বছরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখছে।

অর্থাৎ এটি একটি ‘মনস্তাত্ত্বিক সীমায়’ পরিণত হয়েছে। কারণ, সূচক যখনই ৬ হাজার পয়েন্টের আশপাশে নামে, তখনই বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পর্যন্ত সবার মধ্যেই একধরনের উদ্বেগ-আতঙ্ক তৈরি হয়, যা এখন দেখা দিয়েছে। আবার সূচক ৬ হাজার পয়েন্ট থেকে ওপরের দিকে ছুটলে অনেকেই আশাবাদী হয়ে ওঠেন। যদিও কয়েক দিন ধরে সূচক ও ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এ ধরনের গুজব থেকে সতর্ক থাকার জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

গত ১০ মার্চ বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ও জেড শ্রেণির বিষয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় এ মুহূর্তে কমিশনের বিবেচনায় নেই। তাই এ ধরনের গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।

শেয়ারবাজারে গতকাল মঙ্গলবারও দেখা গেছে, ভালো মৌলভিত্তির বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সবচেয়ে ভালো মৌলভিত্তির ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচকে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১টিরই দরপতন হয়েছে। এই ৩০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫টির শেয়ারের দাম।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!