• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বর্ণাঢ্য এক জীবন আলী যাকেরের


বিনোদন প্রতিবেদক নভেম্বর ২৭, ২০২০, ০২:৩০ পিএম
বর্ণাঢ্য এক জীবন আলী যাকেরের

ঢাকার মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমা জগৎ তার প্রতিভার সাক্ষী হয়েছে পাঁচ দশক

ঢাকা : বর্ণাঢ্য এক জীবন আলী যাকেরের। মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমা জগৎ তার প্রতিভার সাক্ষী হয়েছে পাঁচ দশক।

তিনি ঢাকার মঞ্চের গ্যালিলিও বা টেলিভিশনের পাগলাটে বড় চাচা। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন, বিজ্ঞাপন জগতে রয়েছে তার অবদান। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও তার অবদান স্মরণীয়। একজন সফল সংগঠক বটে।

বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। এ কারণে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন। সম্প্রতি আক্রান্ত হন করোনায়।

২০২০ সালের অনেক বিষণ্ন ঘটনার মাঝে যুক্ত হলো আলী যাকেরের মৃত্যু। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হন শুক্রবার সকালে।

১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ নাট্যব্যক্তিত্ব। আলী যাকের ছিলেন চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়। বাবা মোহাম্মদ তাহের ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বাবার চাকরির বদলি সূত্রে অল্প বয়সে কুষ্টিয়া ও মাদারীপুরে কাটান আলী যাকের। পড়াশোনা করেন নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন আলী যাকের, নির্দেশনায় ছিলেন মামুনুর রশীদ। ওই বছরের জুন মাসে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন। দলটির জন্য আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে। তখন থেকে নাগরিকই তার ঠিকানা।

১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকে, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা।

অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকের অভিনেতা ও নির্দেশক তিনি। তালিকায় আরও আছে সৎ মানুষের খোঁজে, দেওয়ান গাজির কিস্সা, কোপেনিকের ক্যাপটেন, গ্যালিলিও ও ম্যাকবেথ।

আজ রবিবার, বহুব্রীহি, তথাপি, পাথর, দেয়াল’সহ অসংখ্য টিভি নাটক দিয়ে দেশজুড়ে পরিচিতি পান আলী যাকের। বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটকে তার চরিত্রগুলো আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়। বেতারে অর্ধশতের বেশি নাটক করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন আগামী, রাবেয়া, লাল সালু, নদীর নাম মধুমতীর মতো আলোচিত চলচ্চিত্রে।

টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। নানা বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেছেন দীর্ঘদিন। প্রকাশিত হয়েছে বই— সেই অরুণোদয় থেকে ও নির্মল জ্যোতির জয়।

তিনি একাধিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আলী যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য।

বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা।

স্ত্রী খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের, ছেলের বউ মিম রশিদ, নাতনি নেহা ও মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়াকে নিয়ে ছিল আলী যাকেরের সংসার।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!