• ঢাকা
  • সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
হারাতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

ভালো নেই ধুনটের মৃৎশিল্পীরা


বগুড়া প্রতিনিধি মার্চ ১৯, ২০২১, ০৫:৫৩ পিএম
ভালো নেই ধুনটের মৃৎশিল্পীরা

বগুড়া : আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে হারাতে বসেছে মাটির তৈরি সামগ্রী। সেই স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। কাঁচামালের চড়ামূল্য, মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কম থাকায় বিপাকে পড়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার মৃৎশিল্পের কারিগররা।

ধুনট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিলকাজুলী গ্রামের পালপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, এ পেশার অনেকেই এখন পৈতৃক পেশা ছেড়ে দিয়ে কেউ বা রিকশা চালান, আর কেউ বা দিনমজুরের কাজ করছেন। যারা এ পেশা ছাড়তে পারেননি, তাদের অনেকেই আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মরণাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়েছেন। মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কম থাকায় অনেকে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করেন।

মৃৎশিল্পী মাখন পাল জানান, বর্তমানে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের আর বিশেষ ভূমিকা নেই। একটা সময় ছিল যখন মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন, সানকি, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কলস, সাজ, ব্যাংক, প্রদীপ, পুতুল, কলকি, দেবদেবীর মূর্তি ও ঝাঝরের বিকল্প ছিল না। ঋণ প্রদানে অনীহা ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা আর প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে এ শিল্পের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধিত না হওয়ায় তা আজ আর প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। ফলে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অনেকে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

বিলকাজুলীর পালপাড়া মৃৎশিল্পীরা বলেন, ‘মৃৎপণ্য তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েক গুণ। মাটি সব সময় পাওয়া যায় না।

দূরদূরান্ত থেকে আনতে খরচ বাড়ে; কিন্তু তৈরি পণ্য বিক্রিকালে যে দাম চাওয়া হয়, সেই দামে কিনতে চায় না ক্রেতা। অন্য দিকে নিত্য প্রয়োজনী পণ্যর মূল্য বেশি থাকায় সংসারের চাহিদা মেটাতে পারি না। না পারি ছেলে মেয়ের লেখা-পড়ার যোগান দিতে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদেরও ছাড়তে হবে এ পেশা। আর আমাদের মত এভাবেই একের পর এক হারিয়ে যাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!