• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবুল হাসান : নিঃসঙ্গতাকে শিল্পে রূপান্তর করা এক কবি


সাহিত্য ডেস্ক আগস্ট ৪, ২০২১, ০৪:১৯ পিএম
আবুল হাসান : নিঃসঙ্গতাকে শিল্পে রূপান্তর করা এক কবি

ছবি : নিঃসঙ্গতার কবি আবুল হাসান

ঢাকা : ‘এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া
তোমার ওখানে যাবো, তোমার ভিতরে এক অসম্পূর্ণ যাতনা আছেন,
তিনি যদি আমাকে বলেন, তুই শুদ্ধ হ’ শুদ্ধ হবো
কালিমা রাখবো না!’

আবুল হাসান। যার কবিতা বিচ্ছিন্নতা বোধ, স্পর্শকাতরতার ভাষা ও শ্রুতির কথা বলে। তার ভাষা কথ্য কথার দোসর। বাংলা সাহিত্যে তার আবির্ভাব ষাট দশকে। তিনি কবিতার মধ্যে দিয়ে নিঃসঙ্গ মানুষ ও মানুষের অন্তর্গত বেদনা এবং মানুষের সংবেদনশীল সত্তার সাথে একাত্ম হয়েছেন। নিঃসঙ্গতাকে করেছেন শিল্পে রূপান্তর।

কবি তার পরিচয় দিতে গিয়ে নিয়েছেন কবিতর মধ্যে আশ্রয়। ‘আবুল হাসান’ কবিতাটি তার ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ- আমি ‘বহুদিন একা একা প্রশ্ন করে দেখেছি নিজেকে,
যারা খুব হৃদয়ের কাছাকাছি থাকে, যারা এঘরে ওঘরে যায়
সময়ের সাহসী সন্তান যারা সভ্যতার সুন্দর প্রহরী
                                    তারা কেউ কেউ বলেছে আমাকে—
এটা তোর জন্মদাতা জনকের জীবনের রুগ্‌ণ রূপান্তর,
একটি নামের মধ্যে নিজেরি বিস্তার ধরে রাখা,
তুই যার অনিচ্ছুক দাস!’

তিনি ১৯৪৭ সালের ৪ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার বর্নি গ্রামের নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। আবুল হাসানের প্রকৃত নাম আবুল হোসেন মিয়া। বাবার চাকরির সুবাদে ফরিদপুর থেকে ঢাকা আসেন। আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। আরমানিটোলা স্কুলে পড়ালেখার সময় থেকেই তিনি নিয়মিত কবিতা লিখতে শুরু করেন।

আবুল হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ১৯৬৫ সালে ভর্তি হলেও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার্জন সম্পন্ন করেননি। একটা সময় তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। কাজ করেছেন ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ ‘গণবাংলা,’ ‘দৈনিক ‘জনপদ’ ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ এর মতো প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাগুলোতে।

আবুল হাসানের জীবনে ১৯৭০ সাল বিশেষ তাৎপর্যবহ। কারণ ‘শিকারী লোকটা’ শিরোনামে একটি কবিতার জন্য এ সময় সমগ্র এশিয়াভিত্তিক এক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে বিশেষ পুরষ্কার লাভ করেন তিনি। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রাজা যায় রাজা আসে’ প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘যে তুমি হরণ করো’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। অন্যদিকে হাসপাতালের বেডে শুয়ে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘পৃথক পালঙ্ক’র পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন তিনি। এই কাব্যগ্রন্থ ‘পৃথক পালঙ্ক’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে।

আবুল হাসান একজন ক্ষণজন্মা কবি। তিনি ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর মাত্র আটাশ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করে। এই কবি ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৮২ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

সোনালীনিউজ/এসএন

Wordbridge School
Link copied!