• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

অর্ধেক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৮, ২০২৪, ০৯:১১ এএম
অর্ধেক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন

ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, প্রায় পৌনে (প্রায় অর্ধেক) তিন কোটি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। কিছু কিছু এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আবার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অনেক এলাকার বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। একই সঙ্গে প্রায় ৭৫ হাজার ট্রান্সফরমার, ৪০ হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ বিদ্যুতের অন্যান্য যন্ত্রাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তেও পারে। অন্যদিকে পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত এই তথ্য জানা যায়।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরিশালের অধিকাংশ গ্রাহক এবং ফেনী, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এলাকাভেদে ১০ থেকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না এসব এলাকার গ্রাহকরা।

সন্ধ্যার দিকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রায় পৌনে তিন কোটি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অনেক এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক হবে। পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওজোপাডিকোর প্রায় দুই লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, তার ছিঁড়ে এবং সঞ্চালন লাইনে গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। এর ফলে বাগেরহাটের ছয় লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়েছে।

গত রবিবার সকাল থেকেই খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনি; বাগেরহাটের অধিকাংশ এলাকায় গতকাল সারাদিনই বিদ্যুৎ ছিল না। ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানায়, সোমবার সকাল ৮টা থেকে পুরোপুরি সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় ৪ লাখ ৩৪ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারে গত রবিবার রাত দেড়টা থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পিরোজপুরে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পিডিবি জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা উপকূলীয় এলাকায় বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। পিডিবির মুখপাত্র শামীম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় সারাদেশের অনেক বৈদ্যুতিক পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- মূলত খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হবে। বর্তমানে সংস্থাটি সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যা গত রবিবার সন্ধ্যায় ছিল ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রায় ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে ৬৫টি গ্রাহক সংযোগ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকার ৩০টি সমিতিতে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছে পোল বিনষ্ট দুই হাজার ৩৯২টি, ট্রান্সফরমার বিনষ্ট এক হাজার ৯৮২টি, তার ছেঁড়া ৬২ হাজার ৪৫৪টি, ইন্সুলেটর ভাঙা একুশ হাজার ৮৪৮টি, মিটার বিনষ্ট ৪৬ হাজার ৩১৮টি। সার্বিকভাবে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি ৭৯ কোটি দুই লাখ টাকা। দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসার বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহক এক কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার।

ওজোপাডিকোর প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছে পোল বিনষ্ট ২০টি, পোলে হেলে পড়া ১৩৫টি, বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়া ২৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার, ১১ কেভি পোল ফিটিংস বিনষ্ট ১৪২ সেট, ট্রান্সফরমার বিনষ্ট ১২টি, ১১ কেভি ইন্সুলেটর বিনষ্ট ১৩৪টি। সার্বিকভাবে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা। বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে বিদ্যুৎহীন গ্রাহকসংখ্যা চার লাখ ৫৩ হাজার একশ। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী এফএসআরইউর অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থাপনাসমূহের কোনো ধরনের ক্ষতিসাধিত হয়নি।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হ্রাসকৃত আরএলএনজি সরবরাহ গতকাল বিকাল থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার এমএমসিএফডিতে উন্নীত হয়েছে।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!