ঢাকা: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল এক বিপদ। সদ্য আবিষ্কৃত হয়েছে একটি গ্রহাণু, যার নাম ২০২৪ ওয়াইআর৪। ব্যাস প্রায় ৬০ মিটার (১৯৬ ফুট)। এই গ্রহাণু আগামী ২০৩২ সাল নাগাদ পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসবে বলে শঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিষয়টি জানিয়েছে নাসার সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজ (সিএনইওএস)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসবে, সম্ভাব্য দূরত্ব ধরা হচ্ছে মাত্র ১,০৬,২০০ কিমি। তবে এর কক্ষপথের হিসাব-নিকাশে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকায় এটি সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানার শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা ১/৮৩। যা ২০০৪ সালের পর থেকে আবিষ্কৃত গ্রহাণুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এমনকি ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং নাসার সেনট্রি রিস্ক টেবিলে এটি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রহাণুর তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে।
নাসার অ্যাটলাস প্রোজেক্টের টেলিস্কোপ প্রথম এটি শনাক্ত করে। পরে ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত করা হয়।
পৃথিবীবাসীর কি ভয় পাওয়া উচিত এতে?
এই গ্রহাণু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই— জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি সম্ভবত পৃথিবীকে অতিক্রম করে চলে যাবে। নাসার গবেষক ডেভিড র্যাঙ্কিন বলেছেন, ‘মানুষকে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সম্ভাব্য প্রভাব খুবই কম, এবং সর্বোচ্চ সম্ভাবনা হলো এটি আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে যাবে।’
পৃথিবীতে আঘাত হানলে কী ঘটতে পারে?
বিজ্ঞানীদের মতে, এটি হয় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে একটি বিশাল ‘এয়ারবার্স্ট’ সৃষ্টি করবে, যা ভয়ংকর বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিশাল এলাকার ক্ষতি করতে পারে। না হলে এটি সরাসরি ভূমিতে আঘাত হানার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় সংঘটিত টুঙ্গুস্কা বিস্ফোরণের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেখানে প্রায় ৮০ মিলিয়ন গাছপালা ধ্বংস হয়েছিল এবং বিস্ফোরণের শক্তি ছিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন টন টিএনটি’র সমান। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, সেখানে একটি ১০ মিটার ব্যাসের গ্রহাণু আঘাত করেছিল বলে ধরা হয়। আর ২০২৪ ওয়াইআর৪ তার চেয়েও ৬ গুণ বড়।
এখন বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির গতিপথ আরও সুস্পষ্ট করার জন্য কাজ করছেন। ২০২৮ সালের পর্যবেক্ষণে এটি আসলেই পৃথিবীতে আঘাত হানবে কিনা, তা বোঝা যাবে আরও ভালোভাবে।
ইউআর