• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুর্বাচলে গরু লুট আতঙ্কে, কৃষকদের নির্ঘুম রাত


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানুয়ারি ২০, ২০২০, ০৩:০৮ পিএম
পুর্বাচলে গরু লুট আতঙ্কে, কৃষকদের নির্ঘুম রাত

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পুর্বাচল উপশহরসহ আশে-পাশের এলাকা গুলোতে গরু লুটের হিরিক পড়েছে। ধারালো অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতদল বসতবাড়িতে হানা দিয়ে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের পালিত গরু।

প্রায় প্রতিদিনই ডাকাতদল ধারালো অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হানা দিচ্ছে গ্রাম গুলোতে। অস্ত্রেশস্ত্রে ডাকাতদলের ভয়ে নিজের পালন করা গরু তুলে দিতে হচ্ছে ডাকাতদের হাতে। বর্তমানে গ্রাম গুলোতে গরু লুট আতঙ্ক বিরাজ করছে। এখন স্থানীয় কৃষকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। গরুসহ যানমাল রক্ষায় রাতভর পাহাড়া দিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার দাউদপুর ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন এলাকাটি কৃষি নির্ভর। এ দুটি ইউনিয়নের মানুষ কৃষি ও সবজি চাষের উপর নির্ভর ছিলো। পুর্বাচল উপশহর গড়ে উঠার পর থেকে নিজের বা অন্যর প্লটে ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় অনেকেই বসবাস করে আসছেন। আর বেশির ভাগ কৃষক গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

বিশেষ করে ২নং সেক্টরের সিটি মার্কেট, সুলফিনা, আলমপুর, হারারবাড়ি, পর্শি, পাঁচবাগ দড়িগুতিয়াবো বাজার, গোপিন্দপুর, কামতা, গোয়ালপাড়া, ধামছি, গুচ্ছগ্রাম, কালনি, ফেরচাইত, জিন্দাসহ বেশ কয়েক গ্রামে এখন গরু লুট আতঙ্কে কৃষকরা রির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

গত এক মাসে বাগবেড় সিটি মার্কেট এলাকার মোতালিব মিয়ার দুটি গরু, রহিম মিয়ার দুটি গরু, আলমপুর এলাকার মোমেন দেওয়ানের ৩টি গরু, ধামছি এলাকার গাফ্ফার মিয়ার ৭টি গরু, কুমারটেক এলাকার মোহাম্মদ আলীর বাড়ি থেকে ৬টি গরু, গোয়ালপাড়া এলাকার ফাইজ উদ্দিনের দুটি গরু, সেরাজ উদ্দিনের দুটি গরু, ৯নং সেক্টরের ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেনের দুটি গরু, সুলফিনা এলাকার জাইদুল মিয়ার ৩টি গরু, আলম মিয়ার ১টি গরু,রত্না আক্তারের ৩টি গরুসহ আরো বেশ কয়েকজন কৃষকের গরু লুট করে নিয়ে গেছে। গরু গুলো লুট করে নিয়ে যাওয়ার কারনে নিঃশ হয়ে পড়েছে কৃষকরা। তারা বিভিন্ন এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ গ্রহণ করে গরু পালন করেছিলেন।

কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, পুর্বাচল উপশরের ভেতরে থাকা এলাকা গুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা ভালো। প্রশস্থ্য সড়ক হওয়ায় ডাকাতদল অতি সহজেই গাড়ি নিয়ে এসে ডাকাতি করে চলে যেতে পারে। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোন টহল ব্যবস্থা না থাকায় গরু লুটের ঘটনা গুলো ঘন ঘন ঘটছে।

ইতি পুর্বে গরু লুট চক্রের সক্রিয় সদস্য রানা ভুইয়ার বিচার করেন এলাকাবাসী, চুরির অভিযোগে জেল হাজতে পাঠানো হয় গোয়ালপাড়া এলাকার জাকির হোসেন ওরফে জামাই জাকিরকে, আরো বেশ কয়েকজনকে গরু লুটের ঘটনায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও গরু লুট বন্ধ করা যাচ্ছেনা।

এলাকায় চিহ্নিত জুয়ারি, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের  সহযোগিতায় এসব কর্মকান্ড হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেন বলেন, ট্রাক বা পিকআপে করে অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতদল গ্রাম গুলোতে ঢুকে হানা দিচ্ছে। পুর্বাচলে অল্প সংখ্যক বাড়িঘর হওয়ায় কৃষকরা ভয়েই বাঁধা দিতে সাহস পায়না। অস্ত্রের ভয় দেখালে কৃষকরা নিজের পালিত গরু দিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

রূপগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত জসিম উদ্দিন বলেন, গরু চুরি বা লুটের অভিযোগ কেউ করেনি। এছাড়া পুর্বাচল উপশহরের এলাকা গুলোতে ফাঁকা ফাঁকা ঘরবাড়ি। পুলিশি টহল ব্যবস্থা রয়েছে। টহল ব্যবস্থা আরো বাড়ানো হবে। তবে চুরি, ডাকাতি ও অপরাধমুলক কর্মকান্ড রোধে পুলিশকে এলাকাবাসীর সহযোগীতা করতে হবে।

সোনালীনিউজ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!