• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচারণায় তরুণ ও নারীদের গুরুত্ব ছিল আ.লীগের


বিশেষ প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮, ০১:৫৪ পিএম
প্রচারণায় তরুণ ও নারীদের গুরুত্ব ছিল আ.লীগের

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেশি গুরুত্ব দেন তরুণ ও নারী ভোটারদের। গত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারো দলটির প্রচারের মূল লক্ষ্য ছিল তরুণ ও নারীসমাজ।

সব শ্রেণি ও পেশার ভোটারের মন জয়ের প্রাণান্তকর চেষ্টা থাকলেও দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা তরুণ ও নারীদের আকৃষ্ট করতে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ সময়ের প্রচারণায়ও ছিলেন বিরামহীন। মাঠ থেকে ভার্চুয়াল জগৎ- সবখানেই গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ছিল প্রচারণা।

শেষ সময়ে গণসংযোগে ব্যস্ত প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও উঠান বৈঠকসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রচারণা চালান।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মতে, ভোটার, প্রার্থী ও প্রচারণা কর্মী- সব দিক থেকেই এবার নির্বাচনের মাঠ অনেকটা বেশি দখলে রাখছে তারুণ্য। এবার তরুণ ভোটারের সংখ্যা অন্তত আড়াই কোটি। তাদের মধ্যে এবার অন্তত এক কোটি ২৩ লাখ নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবে। মোট ভোটারের উল্লেখযোগ্য অংশই নারী।

তরুণ ও নারীদের একটা মুখ্য অংশের সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। তাদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রচারণায় নতুনত্বও আনে দলটি। বাস্তবের মতো করে স্বপ্ন দেখায়। তুলে ধরে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও তরুণদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চিত্র। প্রচারণার মাঠে তরুণ ও নারীদের দারুণ সাড়া পেয়েছেন বলেও বাংলাদেশের খবরকে জানান কয়েক প্রার্থী।

দলের শীর্ষ নেতাদের মতে, নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী তরুণ ভোটারদের বড় একটি অংশই মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি আকৃষ্ট। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলিও অনেক তরুণ ও নারীকে দলটির প্রতি আকৃষ্ট করেছে। অনেকের আগ্রহে জোয়ার এনেছেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো নৌকা মার্কার জনপ্রিয় প্রার্থীরা। দলের প্রচারাভিযানে অভিনয় শিল্পী, সাহিত্যিক, খেলোয়াড় ও বুদ্ধিজীবীরা অংশ নেওয়ার বিষয়টিও তরুণদের মধ্যে সাড়া ফেলে।

শীর্ষ নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের প্রচারণায় চমক থাকায় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকা তরুণ ও নারীদেরও নির্বাচন নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হওয়া প্রায় ১৮ দিনের প্রচারণায় তাদের আগ্রহ ও দলের প্রতি মুগ্ধতা লক্ষ করেন প্রার্থীরা। যদিও আজ শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে প্রচারণা বন্ধ হবে, মূল প্রচারণার সময় গতকালই শেষ হয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

দলের শীর্ষ পর্যায়ের কারো কারো মতে, এবারের সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় ঐতিহ্যগত ধারার চেয়ে অনেকটা এগিয়ে ছিল অনলাইনকেন্দ্রিক ফেসবুক ও টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যম। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয় ওয়েবসাইটসহ আরো অনেক নতুন কৌশল। এসব মাধ্যমে মূলত তরুণদের উপস্থিতিই বেশি। ফলে আওয়ামী লীগের প্রচারণায় বিশেষ গুরুত্ব ছিল ভার্চুয়াল জগতেও।

দলীয় প্রার্থীদের পোস্টার, প্রচারপত্র ও ব্যানার ছাড়াও বিভিন্ন রকম গানে গানে স্লোগান তৈরি ও ডিজিটাল মাধ্যমের নানা উপকরণের মধ্য দিয়ে প্রচারে অনেক নতুনত্ব আনে দলটি। সব শ্রেণির ভোটারকে টার্গেট করে গান ও ভিডিওচিত্র নির্মিত হলেও তরুণ ও নারীদের কথা বিবেচনায় রেখেও গান ও ভিডিওচিত্র ছিল। তবে বেশ কয়েকটি আসনে প্রচারণাকালে সহিংসতার ঘটনায় সেসব আসনের মহাজোটের প্রার্থীরা সমালোচনারও শিকার হন।

আওয়ামী লীগের প্রচার উপ-কমিটির তথ্য মতে, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও বিরোধীদের নেতিবাচক রাজনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে এবারের প্রচারণায় পাঁচটি মাধ্যম ব্যবহার করে দলটি। টিভি চ্যানেল, পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন ইভেন্ট পরিচালনার মাধ্যমে প্রচারণা।

এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। দেশের অধিকাংশ তরুণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জড়িত বলে দলটি বেশি জোর দেয় সেখানে। দলের প্রচার উপ-কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচারণার কাজগুলো করে দলটির গবেষণা শাখা ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই)।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!