• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বরযাত্রী সুমনের লাশ দেখে বাবার মৃত্যু


জেলা প্রতিনিধি জুলাই ১৬, ২০১৯, ০৪:২২ পিএম
বরযাত্রী সুমনের লাশ দেখে বাবার মৃত্যু

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিয়ের মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বরযাত্রী সুমনের লাশ দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বাবা মুছা শেখ। সোমবার বিকেল  সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সলপ স্টেশনের পাশের অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন সুমন। 

সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সলপ স্টেশনের পাশের অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় বর-কনে ও শিশুসহ অন্তত ৯ জন নিহত হন। মাইক্রোবাসের চালক বাদে বাকীরা সবাই আত্মীয়। রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এপপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় ট্রেনের যাত্রীসহ আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ছেলের লাশ দেখতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে ও বর রাজন হোসেন (২৫), উল্লাপাড়ার চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে ও কনে সুমাইয়া খাতুন (২০), বরযাত্রী ও বরের দুলাভাই সুমন, বরযাত্রী টুটুল, খোকন, শরীফ, ভাষান, সামাদ ও বায়েজিদ। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ছেলের লাশ দেখতে গিয়ে হৃদরোগের আক্রান্ত হয়ে মরা গেছেন নিহত সুমনের বাবা মুসা শেখ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উল্লাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা হতাহতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উন্মুক্ত লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় বিয়ের বহরের একটি মাইক্রোবাস পদ্মা এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বেশ কিছুদূর পর্যন্ত ছেচড়ে যায়। এতে ৯ জন মারা যান। নিহতদের মধ্যে আটজনই এক পরিবারের। অন্যজন মাইক্রোবাসের চালক। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। তিনি আরও জানান, অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই ক্রসিংয়ে কোনো ব্যারিয়ার বা বার্জ ছিল না। এমনকি সেখানে রেল বিভাগের কোনো পাহারাও নেই।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জিআরপি থানার ওসি হারুন মজুমদার ও দমকল বাহিনীর সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, বরযাত্রীবাহী দু'টি বিয়ের গাড়ি উল্লাপাড়ার ঘাটিনা থেকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া কান্দাপাড়ায় যাচ্ছিল। সলপ স্টেশনের উত্তর পাশে উন্মুক্ত লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৪১৫৯) ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেলে বর-কনেসহ কমপক্ষে ৯ জন মারা যান। আহত হন ট্রেনের আরোহীসহ কমপক্ষে ১০ জন। তাদের মধ্যে চারজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর আপাতত সলপ স্টেশনের পাশে রাখা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর আক্রোশ থেকে ট্রেনটি রক্ষায় কাজ করছে দমকল বাহিনী ও পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের পাকশীর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মিজানুর রহমান জানান, ক্রসিংটি রেল বিভাগের নির্ধারিত লেভেল ক্রসিং নয়। স্থানীয়রা নিজেদের চলাচলের স্বার্থে তা উন্মুক্ত করে রেখেছে। দুর্ঘটনার পর ট্রেনটি সলপ স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। বিক্ষুব্ধ লোকজন ট্রেনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ ও দমকল বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনার পর ট্রেনটি দেড় ঘণ্টা দেরীতে ঢাকার দিকে ছেড়ে যায়।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!