• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি  জুলাই ২১, ২০১৯, ০৬:২৪ পিএম
বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে

লক্ষ্মীপুর: রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত নারী তাসলিমা বেগম রেনুর (৪০) গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে বইছে শোকের মাতম।  নিহতের আত্মীয়স্বজন ও ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন জানান, তাসলিমা বেগম রেনুর লাশ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে বলেও জানান তারা।

রোরবার (২১ জুলাই) সকালে রায়পুর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। মিথ্যা অপবাদে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানান স্থানীয়রা।

তাসলিমা বেগম রেনু লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের আলাউদ্দিন মাঝি বাড়ির মৃত আবদুল মান্নানের মেয়ে। ঢাকায় আড়ং নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন তাসলিমা বেগম রেনু। তার মাহিন হোসেন (১১) ও তুবা তাসনিম (৩) নামে এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। ভাই-বোনদের মধ্যে তাসলিমা বেগম রেনু সবার ছোট।

রোববার সকালে রেনুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় বোন সেলিনা আক্তারের সঙ্গে।

সেলিনা জানান, তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ঢাকায় বাস করতেন। তিনি ডিগ্রি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ১৪-১৫ বছর পূর্বে উত্তর বাড্ডা এলাকার তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত দুই বছর আগে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

তিনি বলেন, ‘গতকাল শনিবার (২০ জুলাই) তাসলিমার সন্তান তুবা তাসনিমকে (৩) স্কুলে ভর্তি করার জন্য খোঁজ নিতে উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সে সময় স্থানীয়রা তাকে মিথ্যা অভিযোগে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেন।’

কথাগুলো বলেই কান্নায় জড়িয়ে পড়েন বোন সেলিনা বলেন, তসলিমার সন্তানদের কি হবে, কোথায় পাবে তারা তাদের মাকে। কাকে তারা আম্মু বলে ডাকবে, কাকেই বা জড়িয়ে ধরে ঘুমাবে।

এদিকে, তাসলিমার চাচাতো ভাই হারুনুর রশিদ বলেন, তাসলিমা শিক্ষিত মেয়ে। সে শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এত অল্প বয়সে সে দুনিয়া থেকে চলে যাবে, তা ভাবতে পারি না। তাসলিমাকে মিথ্যা অজুহাতে যারা মেরে ফেলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে, স্থানীয় ইউনিয়ন সদস্য রিয়াজ উদ্দিন বলেন, নিহতের লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হচ্ছে। পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। তিনিও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, ছেলে ধরা গুজব রটনাকারীকে শনাক্ত করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।

আর এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় নিহতের বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটু অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেন ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!