• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেগুণের কেজি ২ টাকা


নীলফামারী প্রতিনিধি মার্চ ২৭, ২০২০, ০৭:২৮ পিএম
বেগুণের কেজি ২ টাকা

নীলফামারী: অনেক আশা নিয়ে এবার দেড় বিঘা জমিতে বেগুণ আবাদ করেছেন নীলফামারী জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের উত্তর কানিয়ালখাতা গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান (৫০)। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ঘাম ঝড়ানো ফসলের দাম না পেয়ে মাথায় হাত পড়েছে তার।

শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকালে ওই কৃষক ৫০ কেজি ওজনের পাঁচ বস্তা বেগুণ এনেছিলেন নীলফামারী শহরের বড়বাজারে বিবিক্র করতে। দুপুর পর্যন্ত প্রতি কেজি বিক্রি করেছেন দুই থেকে তিন টাকা দরে। 

তিনি বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমির বেগুন বিক্রি করে আয় করেছিলাম দেড় লাখ টাকা। এবারের পরিস্থিতিতে উৎপাদন খরচ উঠানো সম্ভব হবে না।

তার মতো অবস্থা ওই গ্রামের কৃষক মো. ছকিমদিন (৫৫), সামসুল হকসহ ( ৫৬) শতাধিক কৃষকের। তারা বলেন, শাক-সবজি কাচা পণ্য হওয়ায় ফলন আসার সময়েই বিক্রি করতে হয়। এ সময়ে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ায় আমাদের কপাল পুড়েছে। এখন যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে পরিবহন খরচও উঠছে না।

শুক্রবার দুপুরে শহরের কাচা শাক-সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ক্ষিরা পাঁচ টাকা, টমেটো ১৫ থেকে ২০ টাকা, বিভিন্ন জাতের আলু ১৫ থেকে ২২ টাকা, মরিচ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং বেগুণ দুই থেকে পাঁচ টাকা দরে বিক্রি হতে। দামে সস্তা হলেও দোকানগুলো ছিল ক্রেতা শূন্য। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

গ্রামে কাচা শাক-সবজি সংগ্রহ করে বাজারে এনে বিক্রি করে জীবীকা নির্বাহ করেন পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের বাজিতপাড়া গ্রামের জামিয়ার রহমান (৫৫)। তার ওই আয়ের উপর নির্ভরশীল পরিবারের নয় সদস্য। করোনা পরিস্থিতিতে ক্রেতা না থাকায় থেমে গেছে তার জীবিকার পথ। অন্যান্য দিন ওই বাজারে বেলা ১২টার মধ্যে তার দোকানের শাক-সবজি বিক্রি শেষ হলেও শুক্রবার ক্রেতার পথ চেয়ে বসে ছিলেন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ব্যবসা করে আয় করি তিন থেকে সাড়ে তিন শ টাকা। তাতেই চলে আমার পরিবারের খাওয়া খরচ। গত তিন দিন ধরে ক্রেতা না থাকায় আমার আয় হচ্ছে এক থেকে দেড় শ টাকা। ওই টাকায় আমার সংসার চলে না।

ওই বাজারের বড় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম জানান, পাইকারি বাজারে প্রতিদিন শাক-সবজির আমদানি প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা না থাকায় বিক্রি হচ্ছে না। ফলে অনেকে শাক-সবজি বাজারে এনে ফেরৎ নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারা বিক্রি করতে না পারায় বাজারেই রেখে চলে যাচ্ছেন। এমন মন্দাভাবে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

তিনি বলেন, দাম বেশি কমেছে দ্রুত পচনশীল সবজির। এ সবের মধ্যে রয়েছে বেগুণ, শসা, ক্ষিরা, টমেটো, লাউ, সিম, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের শাক। আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা দ্রুত পচনশীল না হওয়ায় তেমন দাম কমেনি।

জেলা শহরের বড়বাজারের কাচা শাক-সবজির আড়তদার মোহাম্মদ মাহমুদ আলী বকুল বলেন, বাজারে মৌসুমী কাচা সবজির আমদানি পরিমাণমতো আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বাজার প্রায় ক্রেতা শূন্য। এতে উৎপাদনকারী কৃষক ও ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!