ক্ষরণ
আজও তার ডানায় ডানায় রাঙা সুখ খুঁজে পাই,
হৃষ্ট-পুষ্ট এই দুখ সোহাগী বুকের কাছে-
ছোবল মেরে চলে গতর জুড়ানো ঐ কোলাজ বাতাস।
বেহুলার তলদেশ থেকে উঠে আসে
অচল কাব্যের কোন প্রান্তিক পঙক্তি,
চেনা পথ ধরে তার নুয়ে নুয়ে পথ চলা।
জড়তার ছায়া ঘেঁষে হাতড়ে ফিরি অসীম আকাশ,
ক্লান্ত সীমায় জোড়া দিয়ে চলি-
হাভাতে যত সব সোনালী দোসর।
দুর্বাশার চোখে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে আজও-
অচিন ব্যাথার কোনো ফনিমনসা।
তবু যেন নিবিড় নীরবতা ডিঙোতে ডানা ঝাপ্টে চলা-
এ চোখের দৃষ্টি আজও সেই রঙিন সীমায় দেয় পাড়ি!
গোপন ব্যাধের শরের নীরব খোঁচায়,
হামাগুড়ি দিয়ে রয় হৃদয় আমারি।।
গারদবন্দী হাসি
সমস্ত হাসি যেন আজ পাগলা গারদে বন্দী!
যমদূতের কপালে চিন্তার ভাঁজ,
ফুসরত নেই সংসারে সময় দিতে তার।
দেবরানী সাজ-সজ্জা গুটিয়ে চিলেকোটায় আকাশ খোঁজে..
সূর্যরস্মি বেয়ে নেমে আসে মন পোড়ানো ঘন রোদ,
নক্সাকাটা আকাশটা সব রং গুলিয়ে, উপচে দেয় গুমোট মেজাজ।
কবিরা কী সবাই জীবন বোধের নক্সাজীবি ?
প্রেয়সীর খোঁপায় গোজা ফুল খুলে নিতে চায়
মরিয়া মাতাল কোনো ভ্রমরের বেশে!
ডোঁড়াকাটা সন্ধ্যা শিস বাজিয়ে -
সাজঘরে ডেকে নেয় কামান্ধ আবেশ,
চোখ পুড়ে ছাই হয় চোখের নেশায়।
সহসা সামনে দাঁড়ায় মৃত্যুভয়হীন আগুন্তুক,
তিলক পরায়ে চলে জনমপোড়া এ কপাল জুড়ে।
আনত চোখ তুলে তখন বলতে সাধ হয়
‘ভালবাসায় ভর করে উঠে দাঁড়াও পৃথিবী..
আমারও যে হাসতে ইচ্ছে করে’।।
অস্তিত্ব
তোমাকে ডাকতে গিয়ে প্লাবন ডেকে এনেছি,
স্বপ্ন ডিঙিয়ে ছন্দহীন পায়ে-
বাজিয়ে চলো দ্বদ্ব জড়ানো ঘুঙুর।
ঘিরে থাকা অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায়,
খুঁজতে হবে নবীন বুনোফুল।
বিকেলের নরম মেজাজ মেখে সোহাগী আঁচলে-
চুমু খেয়ে হেসে চলে অজানা শৈশব।
পলকহীন নিরাভরন চোখে শুধু খেলে যায়-
কোন এক অভিমানীর অস্তরাগের ঢেউ,
প্রানের দামে প্রান চেয়ে যায়, জানে না তা কেউ?
পাহাড় পাড়ি
পার করে দে’না...
তবে পাড়ি দেব অসীম পাহাড়,
সাগরে ভেজাবো মেঘ-
শূন্যতায় ভরবো তোর নাও।
নির্লোভ যাযাবর এ হৃদয় আমার...
বসত ক্লান্তি ভুলে তুলে নেবো বিশ্বকে তোর ,
কারুহীন তৃষ্ণা নিয়ে পেতে রইবি বেহাল আঁচল।
যতসব আস্ফালন উড়াবোই বাউল বাতাসে ,
গন্ডে দেবো এঁকে একখন্ড কালো মেঘ!
দোসর ভুলবি তুই- বেহুলার মত নিরব হুঁতাশে।
চাঁদোয়ার গন্ধ শুঁকে হোঃ হোঃ রবে হাসবে আকাশ,
আনত নয়ন তোর হারাবে অধিকারের রেশ-
ক্ষয়ে দেবে চারুহীন অন্তরের বেশ।
চোখ তুলে চেয়ে দেখ-
নুয়ে আছে হৃদয় আমার,
পার করে দে-না, পাড়ি দেবো অসীম পাহাড়।
কাব্য বসতি
আমাকে ত্ইু থেকে থেকে হতে বলতি কবিতা,
বল্গা হরিণের মত ছুটে চলতে আমারও সাধ ছিলো।
পাঁজরে পাঁজর রেখে আল বেঁধে- কে আরুণি হতে না চায় বলতো?
ঘুনের বসতি শুধু ক্ষয়ে চলে কামনার তুন-
সময়ের পালা বদলে তুই আজ দহন সীমার কোনপাড়ে?
আমি নাকি আজকাল খুব হাসতে শিখেছি,
বিরামহীন হাসিতে কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে আসে।
ধ্যান-জ্ঞান যপমালার শিকায় তুলে-
গৃহহীন সন্যাসীর খোঁজে কোমর বাঁধতে সাধ হয়,
আজ তুইওতো আমার মত হতে পারতি কবিতা!
দুজনেই হয়তো বসতি গড়তাম-না হয় যেতাম হয়ে ভবঘুরে,
কিংবা তুই হতিস পথের কবি, আর আমি?
তোর দৃষ্টির সীমানা ঘিওে হয়ে যেতাম কবিতা।
বিভাজন
বৃষ্টির মত খেলে চলা আপন মনে..
দাবানলের প্রলাপ শুনে হাসে প্রান,
পুঞ্জিভুত মেঘ যক্ষের সীমানা ঘেঁষে ক্লান্তি মোছে।
অতন্দ্র পাহারায় সেখানে আদিমতার পূন্যস্নানে,
বিকেলের চাঁদ যেন, শেষ ঝিলিক দিয়েই খালাস।
তারপরও শতাব্দীর পড়ন্ত ছায়ায় কপাল ঠোঁকা!
অভিসারে আঁকা আল্পনা ডিঙিয়ে-
একদিন অসীমতার পানে হাঁটুগেড়ে
সময় ভিক্ষা চাইবে তোমার নৈতিক বিভাজন।
আঁধার ডিঙানো পথিক
তার এক ডানাতে আলোর ঝিলিক,
অন্য ডানায় আধাঁর মাখা।
শূন্য কোন বালিয়ারীর বুকে,
লুকিয়ে রেখেছে হেয়ালি চাঁদের মাতাল নেশা।
সেখানে নিঃশব্দ পায়ে একলা একা-
নিরবতার নির্যাস চুমে খুঁজে চলি প্রানের বুদ বুদ।
ঝিম ধরা লাটিমের মতন খুঁড়ে চলি স্থির কোন বসতি আমার।
উš§ত্ততার গহীনে উপড়ে নিতে সাধ হয় যত সব সোহাগী নোঙর।
তবুও সব আলো-আঁধার ডিঙিয়ে,
যেন জনম জনম হেঁটে চলা -
ক্লান্তিহীন কোন পথিক আমি।।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :