ডিভোর্স বা স্বামীর মৃত্যু হলে সন্তানের দায়িত্ব মায়ের ওপরই বর্তায়। অথবা কখনো কখনো নারীরা বিয়ে না করেও সন্তান দত্তক নেন। সন্তানের লালন পালনের ব্যাপারে নারী পারদর্শী থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সন্তানের বাবার অনুপস্থিতিতে মায়ের পক্ষে লালন পালন অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ওপর যদি হয় চাকুরীজীবী মা তাহলে তার জন্য ব্যাপারটা আরো কষ্টসাধ্যই। তারপরও মা তো মা’ই। হাজারো কষ্ট সহ্য করে সন্তানকে লালন-পালনের ক্ষেত্রে তার তুলনা নেই।
কাজেই নিজেদের কাজ ও সমাজের সঙ্গে মানিয়ে সন্তানদের বড় করে তুলতে ‘আদর্শ’ একক মা বা সিঙ্গেল মাদার হওয়ার কিছু টিপস জেনে নিন-
সন্তানকে সময় দিন-
কর্মব্যস্ত জীবনে আপনার উপর দিয়ে যতই ধকল যাক না কেন, দিনের শেষে সন্তানকে সময় দিন। তার সঙ্গে খেলাধুলা কিংবা মজা করুন। দেখবেন আপনাদের দুজনের সম্পর্কটা অনেক গাঢ় হবে।
প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখুন-
সন্তানের ছোট ছোট দরকারগুলোর দিকে নজর রাখুন। যাতে ‘বাবা থাকলে ভালো হত’ এই সুযোগটাই না আসে। এতে করেও আদর্শ সিঙ্গল মাদার বা একক মা হয়ে উঠতে পারবেন।
পড়াশুনার দিকে নজর দিন-
জীবনে পড়াশুনার কোন বিকল্প নেই। কাজেই আপনার সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে পড়াশুনার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিন।
পরিকল্পনা করুন-
যে কোন বিষয়ে প্ল্যান করতে গেলে আগে পিছে ভাবুন। শুধু প্ল্যান-বি নয়, সি এবং ডি-ও তৈরি রাখুন।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান-
অনেক ছুটির দরকার নেই। ছোট ছোট জিনিস প্ল্যান করুন, যেমন- একসঙ্গে জেগে সিনেমা দেখা, আইসক্রিম খেতে যাওয়া কিংবা লং ড্রাইভ। বাড়িতে পিৎজা অর্ডার করে ছোট খাটো পিৎজা পার্টি করতে পারেন।
নির্দিষ্ট সীমা বজায় রাখুন-
সন্তানের সঙ্গে মিশতে একটা নির্দিষ্ট সীমা বজায় রাখুন। আপনি মা আর সে সন্তান এটা যেন মনে থাকে। বন্ধুর মত মিশতে গিয়ে কোনওভাবে নিজের সম্মান নষ্ট করবেন না। আবার সম্মানের কথা ভেবে নিজের আশেপাশে প্রাচীর টেনে নেবেন এমনটাও নয়।
কারও কথায় কান দিবেন না-
সিঙ্গেল মাদার হলে লোকে অনেক কথা বলবে। সেসবকে জাস্ট পাত্তা না দিয়ে যা করছেন মন দিয়ে করুন। নিন্দুকেরা সবার পিছনেই কথা বলে। তা বলে গায়ে মাখবেন না। বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে খুদেটির সঙ্গে মজা করুন।
সহজ পথে হাটুন-
কোন বিষয়কে জটিল করে তুলবেন না। সহজ করে ভাবুন। কারণ আপনি যে পথে হাটছেন সেখানে 'সিম্পল থিঙ্কিং' হাতিয়ার।
হার মানবেন না-
অনেক স্কুল, কলেজ বাবার নাম ছাড়া অ্যাডমিশন নিতে চায় না, সেক্ষেত্রে দমবেন না। প্রচুর নামী স্কুল, কলেজ রয়েছে যারা মায়ের নাম আবশ্যিক করেছে। খোঁজ নিন।
এনজিও’র সাহায্য নিন-
অনেক এনজিও রয়েছে যেগুলো সিঙ্গল মাদারদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করছে। তাই চাইলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
সন্তানের সঙ্গে ফ্রি হোন-
সন্তানের কাছ থেকে কিছু গোপন করবেন না। যদি আপনার কোন বয়ফ্রেন্ডও থাকে, তাহলে দুজনের পরিচয় করিয়ে দিন। দেখবেন কিছুদিন পর সন্তান আপনার নতুন সঙ্গীর সঙ্গে বেশ মানিয়ে যাবে।
সবসময় হাশিখুশি থাকুন-
‘হ্যাপি মম, হ্যাপি বেবি’ এটা সবসময় মাথায় রাখবেন। বিচ্ছেদ আপনার একার দোষে হয়নি। তাই গিল্ট-টা আপনার একার নয়। তাই সবসময় হাসিখুশি থাকুন। এতে আপনার সন্তানও খুশি হবে।
সঠিক মানুষকে চিনে নিন-
অনেক প্রতিবেশী এবং বন্ধু আপনাকে সাহায্য করতে চায়। তাই ঠিক মানুষের সঙ্গে মিশুন।
সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিন-
সবশেষে নিজের সন্তানকে কোনটা ঠিক কোনটা ভুল সেটা বুঝতে সেখান। তাকে সঠিক শিক্ষা দিন। সঠিক শিক্ষায় সন্তান শিক্ষিত হতে পারলেই আপনি হয়ে উঠবেন আদর্শ সিঙ্গল মাদার বা একক ‘মা’।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন
আপনার মতামত লিখুন :