পিরোজপুর: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্তব্যের অবহেলা, অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক সহকারি শিক্ষক।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ১১৮ নং পূর্বভীমকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কাজী নাসির উদ্দীন মোস্তফা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা বেগমের বিরুদ্ধে এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই সহকারি শিক্ষকের স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় আর্থিক দূরাবস্থার জন্য সোনালী ব্যাংকে পারসোনাল লোনের আবেদন করেন। আবেদন পত্রে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষাকর্মকর্তার সুপারিশ নিতে গত ১৬ ই ফেব্রুয়ারী শিক্ষা অফিস কার্যালয়ে গিয়ে সুপারিশের জন্য বারংবার অনুরোধ করলে তিনি কালক্ষেপণ করেন এবং ঘুষের জন্য ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করেন।
বিকাল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর অফিস বন্ধ করার মুহূর্তে নিরূপায় হয়ে ৮৯ নং মধুরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নাজিরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি একে ফয়সল আলমকে সুপারিশ করার জন্য বলেন।
পরবর্তীতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মামুনুর রহমান হাওলাদারের উপস্থিতিতে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
তিনি আরো বলেন সিটিজেন চার্টার পড়েন। পার্সোনাল লোনে স্বাক্ষর করার জন্য আমি বাধ্য নই। পরবর্তীতে বারংবার অনুরোধ করার পর তিনি স্বাক্ষর করেন।
এ ব্যাপারে নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সভাপতি একে ফয়সাল আলমকে বলেন, আমিও শুনেছি। এটা অত্যান্ত দুঃখ জনক।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মামুনুর রহমান হাওলাদারকে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ওই অভিযুক্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা বেগম বলেন, এটা বানানো। এ বিষয়ে কোনো সত্যতা নেই। তারে নির্দিষ্ট করে কোনও কিছু বলা হয়নি। পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ রতন সিংহ জানান, এ বিষয়টি আমি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করব।
এদিকে গত ১০ আগষ্ট ও ১৫ অক্টোবর বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ২ শিক্ষা কর্মকর্তা ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. অহিদুল ইসলামকে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার ৩৬ নং উত্তর লেবুজিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহিনুজ্জামান বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার অপরাধে এবং তাকে অন্য বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনের জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। এছাড়াও ঘুষ নেওয়া টাকা উপজেলার দুই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরত ও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই সহকারি শিক্ষক।
এআর







































