• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

সোনারগাঁয়ে শত বছর ধরে পালিত হচ্ছে বউ মেলা


সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০৬:০৮ পিএম
সোনারগাঁয়ে শত বছর ধরে পালিত হচ্ছে বউ মেলা

সোনারগাঁও: সনাতন ধর্মের মানুষদের বর্ষপঞ্জিকা মতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈশাখের প্রথম দিন শতবর্ষী বট গাছের নিচে সিদ্ধেশ্বরী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। 

দেশসহ পরিবারে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মঙ্গল কামনায় নারীরা দল বেঁধে পূজাঅর্চনা করে থাকেন। এই পূজাকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। 

স্থানীয়ভাবে এই মেলা বউমেলা নামে পরিচিত। আর এ আনন্দ আয়োজন শুধু একটি সম্প্রদায়কেই নয়, যুক্ত করেছে আশেপাশের সব সম্প্রদায়ের মানুষকে।

সোনারগাঁ উপজেলার জয়রামপুর গ্রামে এক বটগাছকে সিদ্ধেশ্বরী দেবী রূপে এই পূজার প্রচলন ঘটে প্রায় একশ বছর আগে। পরে বংশ পরম্পরায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই পূজা। তবে শুরুর দিকে শুধু বাড়ির নববধূদের নিয়ে এই আয়োজন হলেও পরে তাতে বিভিন্ন বয়সের নারীরা অংশ নেন। শতবর্ষী ওই বট গাছটিকে স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষ সিদ্ধেশ্বরী দেবী বলে আখ্যায়িত করেন।

এ গাছটি সিদ্ধেশ্বরী কালীতলা নামে পরিচিত। কিন্তু এলাকায় এটাকে বলা হয় বউতলা। পুরুষরাও এ মেলায় যান, তবে সংখ্যায় কম।

প্রতি বছরের মতো এবারও সিদ্ধেশ্বরী কালীতলায় সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ পূজার আয়োজন করেছে। নারীরা মৌসুমী ফল নিয়ে লাইন ধরে বটগাছের নিচে রেখে পূজা করছেন। পূজা শেষে তা প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে।

মেলায় আসা দর্শনার্থীরা জানান, প্রতি বছর তার এখানে পরিবারের মঙ্গল কামনায় পূজা-অর্চনা করে আসছেন। এটি বেশ পুরোনো রীতি, পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই পূজায় অংশ নেন তারা। মূল পূজা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে হলেও ভোর থেকেই এখানে পরিবারের বউরা স্নান করে শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মাকে তেল-পান দিয়ে পরিবারের সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করে।

মেলায় আশায় একজন জানান, তারা ছোট বেলা থেকে এখানে পূজা দিয়ে আসছেন। সিদ্ধেশ্বরী কালী দেবী হিসেবে এ গাছে পূজা দেন তারা। প্রথা অনুযায়ী এ গাছের গোড়ায় বিভিন্ন বয়সী নারী মাটি দিয়ে থাকেন। মাটির সঙ্গে একটি করে কড়ি দিতে হয়। এতে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। তাছাড়া পরিবারের সদস্য যত জন, ততবার মাটি দিতে হয়।

পূজার আয়োজক নিলুৎপল রায় বলেন, শুরুর দিকে এখানে পুরুষরা আসতো না, এই পূজা শুধুমাত্র নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। জামাইদের নিমন্ত্রণ করা হতো। তারা মেলায় আসতেন, তবে তারা পূজায় অংশ নিতেন না। তাই তখন থেকেই এই মেলা বউ মেলা নামে পরিচিতি পায়। নববর্ষের প্রথম দিনে দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় এই পূজার আয়োজন করা হয়।

নতুন বছর যেন ভালো কাটে, সবাই যেন ভালো থাকতে পারে শান্তিতে থাকতে পারে তাই এই পূজার আয়োজন করা হয়। প্রায় একশ বছর ধরে এই পূজার আয়োজন হচ্ছে। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!