• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অর্থ সহায়তাকারীদের শনাক্ত


নিউজ ডেস্ক নভেম্বর ১, ২০২২, ০১:২২ পিএম
নির্বাচনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অর্থ সহায়তাকারীদের শনাক্ত

ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অর্থ দিয়ে সহায়তাকারী অর্ধশতাধিক মানুষ শনাক্ত হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে রয়েছে রাজাকার-শান্তি কমিটি-আলবদর-আল শামসের পোষ্য ও দোসররা।

জামায়াত-শিবির, শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের পোষ্যদের অনেকে ছলে-বলে-কৌশলে অর্থের বিনিময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে ঢুকে পড়েছে। এমনকি টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদও বাগিয়েছে শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের পোষ্যদের কেউ কেউ। তারা এখন সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে। এই তালিকায় আছেন ব্যবসায়ী, সরকারি চাকরিজীবী, ঠিকাদার, আমলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানতে পেরেছে যে, তাদের অর্থেই সরকারবিরোধী সিংহভাগ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।  অন্যদিকে অর্থের যোগানদাতা একশ্রেণির ব্যবসায়ী সরকার দলীয় লোক সেজে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। আর সেই টাকা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যয় করছেন। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এই তথ্য উঠে এসেছে। সরকারি চাকরিজীবী, ঠিকাদার, আমলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির সদস্য ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেছেন। এখন সেই অর্থ জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধীদের দিয়ে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করাই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। গোপনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী নেতাকর্মী, ক্যাডারদের সংগঠিত ও সক্রিয় করছে দলটি। এর পেছনে ওই গ্রুপটি মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করছে। এ জন্য লক্ষাধিক কর্মী নিয়োগের ছক কষেছে তারা। বিদেশ থেকে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে এনজিওর মাধ্যমে বিরাট অঙ্কের টাকার ফান্ড সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হুন্ডির মাধ্যমেও বিদেশ থেকে টাকা আসছে। রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিকদের গড়ে উঠা আন্দোলনে উসকানি ও মদত দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটানোর নীল নক্সা তৈরি করেছে উল্লিখিত গ্রুপটি। গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, উক্ত ষড়যন্ত্রকারীরা দলীয় কার্যক্রমের আড়ালে গোপনে একত্রিত হয়ে সরকারবিরোধী ও বর্তমান সরকার শেখ হাসিনাকে অবৈধভাবে উৎখাত করার পরিকল্পনা করেছেন। অর্থও পেয়ে গেছেন পর্যাপ্ত। ষড়যন্ত্রকারী ব্যবসায়ী গ্রুপের টাকা বিশেষ কায়দায় বাসা কিংবা অফিসে  রেখেছেন। অনেকে বাসায় বিশেষ কায়দায় টাকা রেখেছেন। এই ধরনের তথ্যও গোয়েন্দারা পেয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যরাও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছে।

এদিকে দেশে বিভিন্ন সংগঠন তৈরি করেছে সরকারবিরোধী চক্রটি, যেখানে বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে ফান্ড এনে তারা মূলত দলের জন্য ব্যবহার করছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজকে তারা তাদের কর্মী ও দেশি-বিদেশি মিডিয়া ব্যবহারে ম্লান করে অপপ্রচার চালাবে এমনও পরিকল্পনা আছে। এ জন্য বিদেশে তাদের একটি শক্তিশালী সাইবার ইউনিট রয়েছে। তারা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রকারীদের হয়ে সরকারবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সেখান থেকে প্রতি মাসেই দলের জন্য বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

সরকারের হাইকমান্ডের নির্দেশে জামিনে থাকা সরকারবিরোধী নেতাদের তালিকা হচ্ছে। তালিকায় প্রত্যেকের নাম, বাবার নাম, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা, পেশা, দলীয় অবস্থান, নেটওয়ার্ক, অর্থের উৎস ও মামলার রেকর্ডের বিবরণ রাখতে বলা হয়েছে। তারা নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে। একাধিক সূত্রের দাবি, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে এবং সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মহলে থাকা শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের পোষ্যরা অর্থের বিনিময়ে প্রশাসনে থাকা অনুসারীদের কাছ থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও বের করে নিচ্ছে। সেই সব তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে দেশে-বিদেশে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে থাকা বিভিন্ন মহলের কাছে। এমনকি, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী যে শোডাউন হচ্ছে, সেখানেও কৌশলে অর্থ ও লোকবলের জোগান দিচ্ছে চক্রটি। সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!